নবজাতক শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর গুরুত্ব কি
নবজাতক শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর গুরুত্ব কি? এই বিষয়টি আপনাদের সাথে আলোচনা করব। সঠিক তথ্যের অভাবে মা এবং তাঁর পরিবার মনে করে শিশু পরিমাণ মত দুধ পাচ্ছেনা।এই ব্যাপারে আপনাদের সঠিক তথ্য দিব। আমার আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
একটি শিশুর জন্য মায়ের বুকের দুধের গুরুত্ব অপরিসীম। মায়ের দুধের কোণ বিকল্প নেই। জন্মের সাথে সাথেই শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানো শুরু করা দরকার। ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মাত্র মায়ের বুকের দুধই শিশুর জন্য একমাত্র খাবার।
ভুমিকা
বাংলাদেশে ৬ মাস বয়সের নিচের শিশুদের শতকরা ৬৪ জন শিশু শুধুমাত্র মায়ের দুধ খান। ফলে কেবলমাত্র এসব শিশুই মায়ের দুধের পূর্ণ উপকারিতা পেয়ে থাকে।অনেক মাই শিশুর ২ মাস পূর্ণ হতেই শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়া বন্ধ করে দেই। বাংলাদেশ এর ৬ মাস থেকে ২৩ মাস বয়সী শিশুদের মাত্র শতকরা ২১ ভাগ পর্যন্ত ও যথাযথ পরিপূরক খাবার পেয়ে থাকে।
এমন কি মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত পরিবার গুলোও শিশুদের যথাযথ পরিপূরক খাবার প্রদান করতে পারে না। বাংলাদেশের প্রসব পূর্ব স্বাস্থ্যসেবা বা টিকা প্রদান কালে শতকরা ১০ জনেরও কম স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকর্মী মায়েদেরকে নবজাতক ও শিশুর জন্য বিভিন্ন ভাবে আপনাদের সেবা দিয়েও থাকে। যা আপনাদের সব মা বাবা এবং পরিবারের সবাইকে যানা দরকার।
নবজাতক শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর গুরুত্ব কি
আমাদের দেশে সব পরিবারকে নবজাতক শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর গুরুত্ব কি? বিষয়টি জানা দরকার। মা যথেষ্ট বিশ্বাসী হতে পারেনা যে তাঁর বুকে শিশুর জন্য দুধ আছে। জন্মের পরই শিশুকে মায়ের বুকের দুধ দিতে হবে। এই সময় শিশুকে সঠিক ভাবে শুধুমাত্র মায়ের দুধই খাওয়াতে হবে।
পানি বা অন্য কোণ খাবার দেওয়া যাবেনা। অনেক পরিবার আছে এমন যারা শিশু জন্মের পর মেয়ের বুকের দুধের পরিবর্তে মধু বা পানি খাওয়ান যেটা করা উচিত নয়। কারন মায়ের বুকের দুধের কোণ বিকল্প নেই। শিশুর মা ও পরিবারের সবাইকে মায়ের দুধের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে হবে। যেন মা শিশুর কোণ সমস্যা না হয়।
সঠিকভাবে মায়ের দুধ খাওয়ানোর উপকারিতা কি
০-৬ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশের প্রয়োজনীয়তা পুষ্টি মায়ের দুধে পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে। জন্মের প্রথম কয়েক মাস শিশুকে মারাতবক রোগ সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঝুকি থেকে বাঁচায়। পরিবারকে বাড়তি খরচ ও ঝামেলা থেকে বাঁচায়। শিশু মায়ের দুধ সরাসরি চুষে নেই। সেজন্য দূষিত হবার ভয় কম থাকে।
শিশুর ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ালে ঐ সময়ের মধ্যে মায়ের পরবর্তীতে আবার গর্ভবতী হওয়ার ভয় থাকে না। শিশুর জন্মের সাথে সাথে মায়ের দুধ খাওয়ালে মায়ের জরায়ু তারা তাড়ি আগের অবস্থায় ফিরে যায়। প্রসব পরবর্তী রক্ত ক্ষরণ কম হয়। মায়ের স্তন ও জরায়ু ক্যান্সার হওয়ার ঝুকি কম থাকে। শিশুর সহজে হজম হয় ও এলারজি ঝুকি কমে যায়। এবং মা ও শিশুর মধ্যে গভীর ভালবাসার সম্পর্ক তৈরি হয়।
শাল দুধ ও নিয়িমিত দুধের মধ্যে পার্থক্য কি
শাল দুধ- জন্মের পর প্রথম দিকের দুধ যা জন্মের পর পরই শিশু খেতে পারে। হলুদ/ক্রিম রং
বেশ ঘন, এন্টিবডি বেশি থাকে, অধিক পুষ্টিকর, প্রচুর ভিটামিন এ থাকে। যেহেতু এটি খুব ঘন সেইজন্য অল্প পরিমাণই যথেষ্ট
নিয়মিত দুধ-জন্মের ৩ দিন এর মধ্যে তৈরি হয়, শিশু শিশু ঘন ঘন চুষলে মায়ের বুকে প্রচুর দুধ আসে।
সাদা রং, ও পাতলা হয়। সকল এন্টিবডি ও পুষ্টি উপাদান যথেষ্ট পরিমাণে থাকে। যেহেতু এটি শাল দুধের মত ঘন নয়, সেজন্য এটি পরিমাণে বেশি লাগে।
মা ও শিশুর ক্ষেত্রে বাধা কি
জন্মের সাথে সাথে শিশুকে মায়ের মায়ের দুধ দেওয়ার ব্যপারে মায়ের সচেতনতার অভাব, শিশুকে মায়ের বুকের দুধ দেওয়াতে সাহায্য ও সহযোগিতার অভাব, সিজারিয়ান সেকশনের পর মা অজ্ঞান থাকায় শিশুকে সঠিক ভাবে মায়ের বুকে দেওয়ার সহযোগী তাঁর অভাব।
ছাড়া শিশুর জন্য যা হয় তা হচ্ছে, কম ওজনের শিশু ঠিক মত মায়ের বুকের দুধ চুষতে পারেনা। অনেক সময় শিশু অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। শিশুর শ্বাস ও প্রশ্বাসের সমস্যা হতে পারে। এমন বিভিন্ন সমস্যার মুখমুখি হওয়ার আগেই আমাদের সচেতন হলে এই সমসযার সুম্মুক্ষিন হতে হয়না। তাই জন্মের পর থেকেই শিশুকে শাল দুধ খাওয়ান।
মায়ের দুধ খাওয়ানোর পজিশন ও অ্যাটাচমেন্ট কি
শিশুকে বুকের দুধ দেওয়ার সময় মা ও শিশুর অবস্থান ও মার স্তনের সাথে শিশুর সঠিক ভাবে লেগে থাকাটা খুবই জরুরী, এবং প্রয়োজনে জাথাজথ ভাবে দুধ গেলে খাওয়ান উচিত। এসব সঠিক ভাবে মেনে চললে শিশু ও মার কি কি উপকার হয়, না মেনে চললে তারা কি ঝুকিতে থাকে এবং আসব মানার ক্ষেত্রে কোণ কোণ বাধা বা অসুবিধা গুলো কাজ করে টা আলোচনা করা হল।
মা ও শিশুর পজিশন ও অ্যাটাচমেন্ট ঠিক ভাবে করতে হবে।এমন ভাবে মাকে তাঁর শিশুকে দুধ খাওয়াতে যেতে, মায়ের স্তন শিশুর মুখে ঠিক ভাবে লাগাতে হবে, ও মায়ের স্তনের কাল অংশ সহ বোটা শিশু মুখে নিতে পারবে ও শিশু ঠিক ভাবে দুধ খেতে পারবে।
প্রয়োজনে দুধ গেলে খাওয়ালে শিশুর উপকার কি
যখন শিশু মায়ের কাছ থেকে দুরেথাকে এবং শিশুর খুধা পায় তখন শিশুকে আগে থেকে গেলে রাখা দুধ খাওয়ানো যায়। যে শিশু অসুস্থ্য বা দুর্বল সে দুধ চুষতে পারেনা, এক্ষত্রে তাকে দুধ গেলে খাওয়ালে তাঁর উপকার হয়। ফুলে যাওয়া দুধ গেলে ফেললে বুক নরম হয়ে যায়। মা খুব আরাম পায়, এবং শিশুকে মার বুকে ঠিক মত লাগান সম্ভব হয়।
শিশু যদি দুধ চুষে খতে না পারে তাহলে দুধ আশা চালু রাখার জন্য দুধ গেলে ফেলতে হয়। অনেক সময় মার স্তনে দুধ জমে যায়, দুধ গেলে বের করলে মা আরাম পায়' শিশুকে দুধ গেলে খাওয়ালে মা স্বস্তি পান যে শিশু তাঁর দুধ পাচ্ছে। বুকের দুধ পেয়ে শিশু সঠিক ভাবে বেড়ে উঠলে সে কান্নাকাটি কম করে। মা আত্ত বিশ্বাসী হয়ে ওঠেন যে, তিনি শিশুকে ঠিকমত লালন পালন করছেন।
বুকের দুধ দেওয়া সম্পর্কে ভুল ধারণা
মা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা মনে করেন শিশুকে ৬মাস পর্যন্ত শুধুমাত্র বুকের দুধ দেওয়ার জন্য মা বুকে যথেষ্ট পরিমাণে দুধ তৈরি হচ্ছেনা। শিশু যখন কাদে মা ও তাঁর পরিবাররা মনে করেন যে শিশুর ক্ষুদা লেগেছে বলে মনে করেন, অনেক ক্ষেত্রে দাক্তার প্যারামেডিক্স এবং অন্যান্যরা শিশুকে বিকল্প দুধ খাওয়ানোর উপদেশ দিয়ে থাকেন।
বিকল্প দুধের কম্পানি এবং এই বিষয়টি বলে থাকে। তবে মাকে এটি কখন শিখানি হয় না যে ৬৫ মাস পর্যন্ত শিশুকে শুধু মাত্র বুকের দুধ দিতে পারে, এটি কোণ ভাবে দূষিত হবার আশংকা নেই। মাকে এটি কখন সেখান হয়না যে তাঁর শিশু যথেষ্ট পরিমাণে দুধ পাচ্ছে কি টা তিনি কীভাবে বুঝবেন, এবং তাঁর বুকে দুধ আসার জন্য কি করতে হবে।
লেখকের মন্তব্য
মায়ের বুকের দুধ খাওয়ালে শিশুর মানসিক বিকাশ ও কোণ কিছু শেখার ক্ষমতা ও সঠিক ভাবে শিশুকে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। সবশেষে এটি বলব আমার লেখা কথা গুলো যদি আপনাদের কাজে লেগে থাকে তাহলে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url