ইসলামের দৃষ্টি কোণ থেকে নারীর মর্যাদা ও অধিকার
আপনারা নারীর অধিকার ও মর্যাদা সম্পর্কে জানেন। কিন্তু ইসলামে এই বিষয়ে নারীকে মর্যাদা ও ওঅধিকার এর দিক দিয়ে সন্মান দিয়েছে আপনারা সেটা হয়ত অনেকে জানেনা, আজ আপনাদের সেই বিষয়ে সঠিক তথ্য গুলো আলোচনা করব।
ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে নারীর মর্যাদা ও অধিকার এর দিক দিয়ে সন্মান দিয়েছেন।নারী জাতিকে এক
করুন অমানবিক অবস্থা থেকে উদ্ধার করে তাদেরকে মানুষ হিসেবে যথাযোগ্য অধিকার এবং সম্মান
জনক মর্যাদা দিয়েছে। নারীর অধিকার ও মর্যাদা সম্পর্কে কিছু বিষয় তুলে ধরা হয়েছে তা জেনে নিন।
ভুমিকা
মহান আল্লাহ্ পৃথিবিতে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে মানুষ সৃষ্টি করেছেন। তাদের মধ্যে নারী ও পুরুষ রয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে নারীর মর্যাদা ও অধিকার এছাড়া নারী পুরুষের মোলিক পার্থক্য ও বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হল।
মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত। কথাটি সত্য যা কোন জায়গায় এই সন্মান দেওয়া হয়নি,সেটা শুধুমাত্র ইসলাম দিয়াছে। এবং নারীদের অধিক সন্মানের মর্যাদা দিয়েছে।এছারাও শান্তি বিধানের এক অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত করেছে। যা অন্য কথাও করা হয়নি।
ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে নারীর মর্যাদা ও অধিকার
ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে নারীর মর্যাদা ও অধীকার এক সন্মান জনক অবস্থায় এনেছে। নারী জাতি প্রাচিন কাল থেকে এক অন্ধকার জীবন যাপন করত। তাঁদের বেঁচে থাকা মস্কিল হয়ে যেত। কিন্তু ইসলাম এদের ওপর গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
অবহেলিত সমাজে বসবাস কারি নারীদের বিভিন্ন কাজ করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। তবে পর্দাশীল হয়ে। যা অর্জনের জন্য প্রতিটি মুসলিম সচেষ্ট হওয়া আবশ্যক। রাসুল (সাঃ) বলেছেন দুনিয়া হচ্ছে সম্পদ, আর দুনিয়ার মূল্যবান সম্পদ হচ্ছে সতী নারী।
ইসলামে নারীর অধিকার
পৃথিবীতে নারীর সংখ্যা অর্ধকের বেশি বলে ঘোষিত ও প্রচারিত। মায়ের পদতলে সন্তানের জান্নাত এর
ঘোষণা দিয়েছে । স্ত্রীকে শান্তি বিধানের মাধ্যম বলে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে । কন্যা সন্তানকে চক্ষু শীতলকারী আখ্যায়িত করা হয়েছে। ইলম ও আমল তথা শিক্ষা কর্মের ক্ষেত্রেও কেবল নারী হওয়ার কারণে তাদের মর্যাদা ও স্তর পুরুষের তুলনায় নিম্নতর নয় ।
হাদিস বর্ণনার দিক দিয়ে উম্মুল মুমিনিন, আয়েশা (রাঃ) অধিক হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে গণ্য হতেন। সাহাবায়ে কেরামে অনেক মাসাআলা -মাসায়েল তাকে জিজ্ঞেস করতেন। এমনকি কোন কোন মাসআলায় (রাঃ) সাহাবায়ে কেরাম কে সংশোধনও করে দিতেন।
ইসলামে নারীর মর্যাদা ও গুরুত্ব
ইসলাম আগমনের পরও কিছু লোক নারীদেরকে অসন্মান এর দৃষ্টিতে দেখতে থাকে। এ অসন্মানের একটা ধরন ছিল, যে ইবাদত উপাসনায় মগ্ন হয়ে স্ত্রীদের কোন খোজ খবর নিত না। আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর ,আমর ইবনুল আছ ও আবুদ দারদার ঘটনা হাদিস গ্রন্থ সমূহে বিস্তারিত ভাবে বর্ণিত হয়েছে। অত্যাধিক উপসনার কারণে তাদের প্রতি স্ত্রীদের অভিযোগ সৃষ্টি হয়েছিল।
ফলে নবী করীম (সাঃ) তাদেরকে ডেকে বলেন, তোমাদের ওপর তোমাদের স্ত্রীদেরও হক রয়েছে। আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমার নিকট এসে বললেন, আমাকে কি এই সংবাদ দেওয়া হয়নি যে, তুমি সারারাত্রি জেগে ইবাদত কর এবং দিনে ছিয়াম পালন কর?
তুমি ছিয়াম পালন কর এবং মাঝে মাঝে ছেড়েও দাও রাত্রিতে জাগে ইবাদত আবার ঘুমাও। কেননা নিশ্চয় তোমার শরীরের হক আছে, তোমার চখের হক আছে, তোমার উপর তোমার স্ত্রীর হক আছে।
উত্তম আচরণ পাবার অধিকার
রোগ ব্যধি আকস্মিক বিপদে নারীদের অন্তর মুষড়ে পড়ে তারা নিঃসঙ্গতা অনুভব করে, এ সময় ভালবাসার সাথে তাদের পাশে থাকা ও তাদের প্রতি খেয়াল, রাখা আবশ্যক। অনেক দিন ভিনদেশে বা প্রবাসে থাকবেনা। বাধ্যগত কারণে অনেক দিন প্রবাসে থাকতে হলে স্ত্রী ও সন্তানদেরকে সঙ্গে রাখবে। স্ত্রীকে তার পিতা মাতা ও মাহরাম আত্মীয়স্বজন এর সাথে সাক্ষাৎ করা ও মিলিত হওয়ার অনুমতিও দিবে।
বিদায় হজ্জের দিন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, তোমরা মহিলাদের সাথে উত্তম ব্যবহার এর উপদেশ গ্রহণ কর। কেননা তারা তোমাদের উত্তম ব্যবহারের অধীন। উত্তম আচরণ ব্যতিত তাদের উপরে তোমাদের কোন অধিকার নেই। তবে যদি তারা প্রকাশ্য অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়। যদি তারা এরূপ করে তাহলে শয্যা পৃথক করে দিবে। তাদেরকে হালকা প্রহার করবে।
শরীয়ত পরিপন্থী নির্দেশের অবাধ্যতাযদিও নারীদের উপর পুরুষের অধিকার বেশি এবং স্ত্রিদের প্রতি স্বামীদের অনুগত হওয়ার হুকুম দেওয়া হয়েছে। তথাপি উভয়ের উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ্র রেজামান্দি হাসিল এবং আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলের বিধি নিষেধ তথা হুকুম আহকামের উপর পরিপূর্ণ আমল করা। এজন্য স্ত্রীকে শরীআত বিরোধী কোন নির্দেশ দেওয়ার অধিকার নেই। রাসুলুল্লাহ (সাঃ বলেন, আল্লাহার অবাধ্যতায় সৃষ্টির কোন আনুগত্য নেই।
বিবাহে নারীর সন্মতি গ্রহণবিবাহে নারীর সন্মতি গ্রহণও তাঁর অধিকারের মধ্যে পড়ে। প্রাপ্ত বয়স্কা নারীকে তার সুস্পট অনুমতি ছাড়া বিবাহ দেওয়া যাবেনা। কুমারী নারীকেও তার অনুমতি ছাড়া বিবাহ দেওয়া যাবেনা। বিবাহের কথা জিজ্ঞেস করলে নারী যদি চুপ থাকে,এতে তার সন্মতি বোঝা যাবে।
সংশোধন ও প্রশিক্ষণের চিন্তা ও প্রচেষ্টা
পুরুষ পরিবারের প্রধান ও রক্ষক। সে স্ত্রী সন্তান্দের জান মাল ও ইজ্জৎ এর হেফাজত করবে। তাকে আল্লাহ্ এ দায়িত্বও দিয়েছেন যে, সে স্ত্রী পরিজন ও সন্তান কে প্রশিক্ষন দেবে। এবং সু ধারনার উপর প্রতিষ্ঠিত রাখবে। তাদের শিক্ষা ,বিনোদন, কর্মকাণ্ড সঠিক ভাবে বিন্যস্ত করবে।
নারী পুরুষের মধ্যে মোলিক পার্থক্য নিয়ে আলোচনা করা হল
নারী পুরুষ সমান অধিকার নিয়ে বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্ব তোলপাড় হচ্ছে। চেষ্টা চলছে কুরআনিক আইন পরিবর্তনের । যদিও কুরআন নারীকে সে অধিকার দিয়েছে। পৃথিবীর অন্যকোন ধরমগ্রন্থ তা দেয়নি। সাথে সাথে সকল ক্ষেত্রে নারীকে সমান সমঅধিকার এর জন্য এক শ্রেণীর প্রগতিবাদী তথাকথিত নারী উন্নয়ন কর্মীর পক্ষ থেকে চলছে জরাল আন্দলন।
শারীরিক ও সৃষ্টিগত পার্থক্য
পুরুষ মহিলা যেকোন দেশের হক না কেন উভয়ের শরীরে কিছু পার্থক্য দেখা যায়। যেমন প্রাপ্তবয়স্ক হবার পুরুসের মুখে দারি বা গোঁফ হয়। মেয়েদের শরীর কোমল ও নরম হয়। মেয়েদের শক্তি সামর্থ্য পুরুষের চেয়ে কম হয়।
প্রকৃতিগত পার্থক্য
প্রকৃতি বা সবভাবগত দিক দিয়ে ছেলেরা মেয়েদের তুলনায় সাহসী হয়। এ বিষয়টি সে সময় থেকে তার মধ্যে বিদ্যমান থাকে যখন তার মধ্যে পরিবেশের প্রভাব পরার সন্দেহ করা যায় না।নারীরা দ্রুত প্রভাবের হয়। আবার কোন ভিতকর জিনিসকে দেখে অতি দ্রুত তারা ভয় পাই।
বুদ্ধিবৃত্তিক পার্থক্য
সম্প্রতি মানুষের মস্তিকের উপর অনেক গবেষণা হয়েছে এবং নতুন নতুন তথ্য বেরিয়ে আসছে রহস্য উদঘাঁটিত হচ্ছে। গবেষণায় বলা হয় ১০ জন সুস্থ্য পুরুষ ১০ জন সুস্থ্য নারীর উপর পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানো হয়, যাতে জানা যায় যে, নর নারীর মস্তিস্কের ধারণ ক্ষমতা ও বুদ্ধি সমান নয়।
লেখকের মন্তব্য
নারী অধিকারের গুরুত্ব এবং তার অধিকার এর বিভিন্ন দিক সংক্ষেপে তুলে ধরা হয়েছে। যার মাধ্যমে নারীরা যেমন তাদের অধিকার সম্পকে জানতে পারবে তেমনি এসব যেনে তাদের অধিকার প্রদানে পুরুষরা সচেষ্ট হবে।
এছাড়াও তাদের মর্যাদা সম্পর্কে বুঝতে পারবে, নারী পুরুষের মধ্যে কিছু মোলিক পার্থক্য রয়েছে ।আপনাদের মাঝে যদি সঠিক তথ্য পছাতে পারি, এবং আপনারা উপকৃত হন তাহলে আমার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা সার্থক হবে। ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ,
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url