OrdinaryITPostAd

ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও তার প্রতিকার কি

ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও তার প্রতিকার কি?এবিষয় নিয়ে আজ আপনাদের সাথে আলোচনা করব। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা কখনো ভালো হয় না। এরক একজন ব্যক্তি শরীরের সারা জীবন বসবাস করে। বর্তমানে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এরোকে খুব ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও তার প্রতিকার কি


একজন ব্যক্তি যদি বর্তমানের আধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে, তার শরীরের বসবাসরত ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন।তাহলে তিনি প্রায় সম্পূর্ণ স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবেন।ডায়াবেটিস একটি হরমোন জনিত রোগ। ইনসুলিন নামক হরমোনের অভাব বা এর অকার্যকারিতার কারণে দেহের বিপাক বিঘ্নিত হলে, দেহের অধিকাংশ কোষে,

ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও তার প্রতিকার কি

গ্লুকোজের অভাব ও রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় হচ্ছে, ডায়াবেটিস মেলা টাইস বা বহুমূত্র। কারো রক্তের গ্লুকোজ সুনির্দিষ্ট মাত্রা অতিক্রম করলেই তাকে ডায়াবেটিস রোগী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ হল শরীরের এমন একটি অবস্থা, যখন শরীর তার শক্তির জন্য চাহিদা মাপিক গ্লুকোজ বা শর্করা ব্যবহার করতে পারে। না ফলে রক্তে এর পরিমাণ বেড়ে যায়। রক্তে গ্লুকোজের একটি নির্দিষ্ট বা প্রয়োজনীয় মাত্রা আছে। এই গ্লুকোজ আমরা খাবার থেকে পাই। এছাড়া শরীরের মধ্যকার অঙ্গ যেমন লিভার নিজেও গ্লুকোজ তৈরি করে।

গ্লুকোজ কে ভেঙ্গে শরীর শক্তি তৈরি করে। তবে তার জন্য দরকার ইনসুলিন। শরীরের বা অগ্নাশয়ে ইনসুলিন তৈরি হয়। এই ইনসুলিন শরীলের বিভিন্ন কোষে গ্লুকোজ প্রবেশ করতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস হলে রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় ফলের রক্তের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়।

এই ঘনত্ব স্বাভাবিক রাখার জন্য শরীর অন্যান্য কোষ থেকে পানি টেনে নেয়।ফলে শরীরের বিভিন্ন কোষে পানির ঘাটতি দেখা দেয়। পাশাপাশি রক্তে পানি ও গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং অতিরিক্ত পানি ও গ্লুকোজ কে প্রসাবের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। অর্থাৎ শরীর প্রসবের মাধ্যমে এই অতিরিক্ত গ্লুকোজ কমানোর চেষ্টা করে।

ডায়াবেটিসের লক্ষণ কি

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত একজন রোগীর যেকোনো সময়ে যেকোন রকম জটিলতা সম্ভাবনা থাকে। সেজন্য এদের সব সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। একজন ব্যক্তিকে অতিরিক্ত পরিমাণে প্রসব করতে হয়। ফলে তার পিপাসা বৃদ্ধি পায় এবং আরও বেশি পানি পান করতে হয়।কাজেই ডায়াবেটিসে প্রাথমিক লক্ষণ হল একজন ব্যক্তির বারবার পিপাসা পাওয়া এবং বারবার প্রসব করতে যাওয়া।

যেহেতু শরীর গ্লুকোজ কে শক্তির জন্য সরাসরি ব্যবহার করতে পারে না, সেজন্য গ্লুকোজের পরিবর্তে শরীরের জমাকৃত ফ্যাট বা চর্বি শক্তি উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয়। ফলের শরীরের ওজন কমে যায়।

নিচে ডায়াবেটিস রোগের আরও লক্ষণসমূহ আলোচনা করা হলো।ঘনঘন অতিরিক্ত প্রসব হওয়া
  • খুব বেশি পিপাসা লাগা ও প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়া
  • অতিরিক্ত ও অস্বাভাবিক খুদা পাওয়া
  • যথেষ্ট পরিমাণে খাওয়ার সাথে ওজন কমে যাওয়া
  • হতবাক হাসু খাতে দেরি হওয়া
  • চোখে স্পষ্ট ভাবে দেখার অসুবিধা হওয়া
  • বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ হওয়া যেমন খোস ফোড়া ইত্যাদি

রক্তে গুলকোজ বেড়ে যাওয়ার কারণ কি

শরীরের ভেতরে অবস্থিত অগ্নাশয় নামক একটি গ্রন্থি থেকে ইনসুলিন নামক একটি হরমোন নিঃসৃত হয়। এই ইনসুলিন কোন কারনে কম বা অকার্যকর হলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং শরীর থেকে অতিরিক্ত গ্লুকোজ প্রসবের সাথে বেরিয়ে আসে। যখন শ্বেতসার এবং শর্করাযুক্ত খাদ্য খাওয়া হয় তখন শরীলটা গ্লুকোজের পরিবর্তিত করে।

শরীরের শক্তির জন্য এই গ্লুকোজের দরকার হয়। কিন্তু কোন ব্যক্তির শরীরে ডায়াবেটিস থাকলে সেই শরীর গ্লুকোজ কে তার শক্তির জন্য ব্যবহার করতে পারেনা। কারণ শরীর ইনসুলিন তৈরি করছে না। শরীর যে পরিমাণ ইনসুলিন তৈরি করছে তা প্রয়োজনে তুলনায় যথেষ্ট নয়। অথবা ইনসুলিন ঠিকমত কাজ করতে সক্ষম নয়।

উল্লেখিত কারণগুলির ফলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং শরীর তার কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

ডায়াবেটিসের শ্রেণীবিন্যাস কি

অতীতে আমাদের কাছে ডায়াবেটিসের কারণগুলি স্পষ্ট ছিল না। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীগণ বহুদিন যাবত বিভিন্ন গবেষণা ও পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে ডায়াবেটিসের কারণগুলি খোঁজার চেষ্টা করে আসছেন। আগে ডায়াবেটিসের লক্ষণ গুলোকে কেন্দ্র করে যে প্রকারভেদ প্রচলিত ছিল তা অতি সম্প্রতি তো পরিবর্তন করা হয়েছে।

বর্তমানে রোগের লক্ষণ নয় কারণসমূহ কে কেন্দ্র করে বা তার ওপর বিশেষ জোর আরোপ করে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডায়াবেটিসের নতুন প্রকারভেদ অনুমোদন করেছেন। ডায়াবেটিস কে মূলত চারটি শ্রেণীবিন্যাস করা হয়েছে।
  • টাইপ ১
  • টাইপ ২
  • গর্ভকালীন ডায়াবেটিস
  • বিবিত কারণভিত্তিক ডায়াবেটিস

টাইপ এক ডায়বেটিস কি

একসময় এক টাইপ এক ডায়াবেটিস কে ইনসুলিন নির্ভরশীল ডায়াবেটিস বলা হত। যাদের শরীরে এই ডায়াবেটিস আছে তাদের শরীর একেবারে ইনসুলিন তৈরি করে না। ফলে ইনসুলিন ইনজেকশন এর মাধ্যমে তাদের শরীরে এই ইনসুলিন নিতে হয়। এটা ট্যাবলেট বা বোর্ডের মাধ্যমে ভালো করা সম্ভব নয়।

যাদের এই ডায়াবেটিস আছে তাদের অধিকাংশের বয়সি সাধারণত 30 বছরের কম।গড় বয়স ১০ থেকে ১২ বৎসর বয়স। বেঁচে থাকার জন্যই এ সকল রোগীকে ইনসুলিন ইনজেকশন নিতে হয় এবং এর সাথে আরো কিছু চিকিৎসা হিসেবে স্বাস্থ্যসম্মত শোষণ খাদ্য এবং নিয়মিত শরীর চর্চার কথা বলা হয়।

টাইপ ২ ডায়াবেটিস কি

যে সকল ব্যক্তির শরীরে টাইপ ২ ডায়াবেটিস আছে, সে সকল ব্যক্তির শরীর হয়তো ইনসুলিন তৈরি করে। কিন্তু তা ব্যবহার করতে পারে না। কারণ এদের শরীর হয়তো বা প্রয়োজনে তুলনে যথেষ্ট পরিমাণে ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না কিংবা শরীরে ইন্সুলেরে কার্যক্ষমতা কম। সাধারণত 30 বছর বয়সের উপরে লোকজনদের এই রোগ বেশি দেখা দেয়।

তবে আজকাল ৩০ বছরের নিচেও এই ধরনের রোগের সংখ্যা দেখা দিচ্ছে এবং দিন দিন বেড়ে চলেছে। এদের মধ্যে রয়েছে কিশোর-কিশোরী এবং তরুণ ও অপ্রাপ্তবয়স্ক। অনেক সময় টাইপ দুই ডায়াবেটিসের দুই ধরনের কারণ একই সাথে দেখা দিতে পারে। যেমন ইনসুলিন কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া এবং তার সাথে প্রয়োজনের তুলনায় শরীর যথেষ্ট পরিমাণে ইনসুলিন তৈরি করতে না পারা।

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস কি

অনেক সময় গর্ভকালীন অবস্থায় প্রসূতি মায়েদের ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। আবার প্রসবের পর সেই ডায়াবেটিস আর থাকে না। ডায়াবেটিসের এই প্রকার জটিলতাকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলা হয়। গর্ভবতী মহিলাদের ডায়াবেটিস হলে তা গর্ভবতী, ভ্রূণ প্রসূতি ও সদ্য প্রসূত শিশু সকলের জন্য বিপদজনক হতে পারে।

ফলে গর্ভবতী মায়েদের এ সকল বিপদ এড়াবার জন্য গর্ভকালীন অবস্থায় ডায়াবেটিস বিশেষভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ইনসুলিন ইঞ্জেকশন ব্যবহার করা একান্ত আবশ্যক। আর এসব ক্ষেত্রে গর্ভবতী মায়ের সন্তান প্রসব অবশ্যই হাসপাতালে করানো বাঞ্ছনীয়।

সাধারণত গর্ভকালীন সকল মহিলাকে বিশেষ করে যাদের ঝুঁকি রয়েছে যেমন বংশ প্রভাব, স্থূলকায়, বেশি বয়স্ক গর্ভবতী মহিলাদের অবশ্যই ডায়াবেটিস আছে কিনা তা পরীক্ষা করতে হবে।

বিবিত কারণভিত্তিক ডায়াবেটিস কি

বিবিত কারণভিত্তিক শ্রেণীর ডায়াবেটিস বলতে বিভিন্ন কারণে হওয়া ডায়াবেটিস কে বোঝায়। বাংলাদেশ সহ অন্যান্য অনুন্নত দেশে, বিশেষ করে উষ্ণ মন্ডলীর দেশগুলোতে অপুষ্টির শিকার হওয়া এক প্রকার ডায়াবেটিস দেখা দেয়। আগে অপুষ্টির শিকার ডায়াবেটিস রোগীদেরকে অপুষ্টির ডাইবেটিস বা এম আরডি এম এর শ্রেণীভুক্ত করা হতো।

কিন্তু বর্তমানে এই ডায়াবেটিসের কোন প্রচলন নাই। তবে এফসিপিডি বা অগ্রসরয় পাথর পাওয়া অপুষ্টি জনিত ডায়াবেটিস কেউ বিবিধ কারণ ভিত্তিক শ্রেণীভুক্ত রাখা হয়েছে। এছাড়াও হরমোন আধিক্য,বিভিন্ন সংক্রমণ ব্যাধি, ওষুধ ও রাসায়নিক দ্রব্য ,অগ্নাশয় বিভিন্ন রোগ কারণে ইনসুলিন তৈরি কম হওয়া ইত্যাদি শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে কি সমস্য

ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা ভালো করা যায় না কিন্তু নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখলে অনেক বিপদ হয়। ফলে এ রোগ ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখায় চিকিৎসকের লক্ষ্য। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখলে বিভিন্ন রকম মারাত্মক উপসর্গ বা জটিলতা দেখা দিতে পারে যেমন, ডায়াবেটিস

নিয়ন্ত্রণে না রাখলে পক্ষাঘাত, নায়ুতন্ত্রের জটিলতা, হৃদরোগ, পায়ে পচনশীল, ক্ষত, চক্ষু রোগ।এমনকি চোখের ভেতরের রক্তক্ষরণের জন্য অন্ধত্ব মুত্রাসয় ইনফেকশন, প্রসাবের আমিষ বের হওয়া এবং পরবর্তীতে কিডনির কার্যক্ষমতা লোক পাওয়া। পাতলা পায়খানা হওয়ার যক্ষা, নারীর প্রধান চুলকানি,

ফোড়া, ইত্যাদির রোগ হয়ে থাকে। এছাড়াও এ রোগের কারণে যৌন ক্ষমতা কমে যায় এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে বেশি ওজনের শিশুর জন্মদান মৃত শিশু জন্মদান, অকালে সন্তান প্রসব, জন্মের পরে শিশুর মৃত্যু এবং নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরও পোস্টের তালিকাঃ  


ফলে ডায়াবেটিস রুগীদের ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা ছাড়াও শরীরের ওজন বাঞ্ছিত কম ওজনের কাছাকাছি রাখা উচিত। একজন ডায়াবেটিস রোগীর উচ্চ রক্তচাপের রোগ থেকে যেসব জটিলতা দেখা দেয় তার সাথে এই দুটি একত্রিত হলে জটিলতা আরো বেড়ে যায়।

লেখকের মন্তব্য

একজন ব্যক্তি যদি বর্তমানের আধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে, তার শরীরের বসবাসরত ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন।ডায়াবেটিস একটি হরমোন জনিত রোগ এবং এই রোগ সারা জীবন থাকে ভালো হয় না তবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত একজন রোগীর যেকোনো সময় যেকোনো

ধরনের জটিলতা সম্ভাবনা থাকে। এই সমস্ত রোগীদের ইনসুলিন দিয়ে ডাইবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়। প্রিয় পাঠক আমার এই লেখা যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, এবং আপনারা যদি সঠিক তথ্য পেয়ে থাকেন তাহলে একটি লাইক কমেন্ট এবং শেয়ার করবেন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url