OrdinaryITPostAd

ডায়াবেটিস থেকে চোখের বিভিন্ন সমস্যা



ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা মানুষের শরীরে একবার প্রবেশ করলে মৃত্যু পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকে। ডায়াবেটিস থেকে চোখের বিভিন্ন সমস্যা কি সে বিষয়টি নিয়ে আজ আপনাদের সাথে আলোচনা করব। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ এটি কখনো ভালো করা যায় না তবে সঠিক ব্যবস্থার মাধ্যমে এরূপ সম্পন্ন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তবে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে তার সবাই রোগীকে নিজ দায়িত্বে মেনে চলতে হবে।
ডায়াবেটিস থেকে চোখের বিভিন্ন সমস্যা


ডায়াবেটিস রোগের ব্যাপারে রোগীর পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতার খুব ভালো কাজ করবে। ফলে এ রোগের সূচিকিৎসার জন্য ডায়াবেটিস সম্পর্কের রোগীর যেমন শিক্ষা থাকা প্রয়োজন তেমনি রোগীর বিশেষ আপনজন বান নিকট আত্মীয়দেরও এ রোগ সম্পর্কে জ্ঞান থাকা দরকার। ডায়াবেটিস থেকে চোখের বিভিন্ন সমস্যা কি বিষয়টি তাহলে আলোচনা করা যাক।

ভূমিকা

গ্লুকোজ এর অস্বাভাবিক দীপকের ফলে রক্তনালীর ও কতগুলো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। ডায়াবেটি সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারলে বা শিক্ষা লাভ করতে পারলে রোগী নিজে নিজেই এ সম্পর্কে অনেক কিছু করতে পারবে। রোগী নিজেই নিজের তার রোগ নিয়ন্ত্রণের রাখার দক্ষতা অর্জন করতে পারবে।

পরিবর্তিত এবং নতুন জীবন প্রণালী খুব সহজভাবে গ্রহণ করতে পারবে এবং নিজেই নিজের জরুরি অবস্থা মোকাবেলা করার ক্ষমতা দক্ষতা অর্জন করতে পারবে। অনিন্দ্রিত ডায়াবেটিসের কারণে আক্রান্ত রোগীর রক্তনালী দেয়াল শক্ত হয়ে হৃদরোগের বা মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণে কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকতে পারে। এছাড়াও ডায়াবেটিসের কারণে চোখের বিভিন্ন সমস্যা হয়ে থাকতে পারে।

তবে একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী যদি তার রক্তের গ্লুকোজে পরিমাণ সঠিক মাত্রায় বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন ।তবে সেটা তার শরীরে ডায়াবেটিসের সাথে সম্পর্কিত জটিলতা ভুলের ঝুঁকি অনেকাংশে কমাতে পারবে।

ডায়াবেটিস থেকে চোখের বিভিন্ন সমস্যা কি

সকল ধরনের ডায়াবেটিসের রোগীরাই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার পর থেকে চোখে ঝাপসা দেখতে থাকেন। কিন্তু সেই রোগীর শরীরে ডায়াবেটিস আছে কিনা এটা রোগী নিজেও জানতে পারে না ডায়াবেটিস পরীক্ষা না করার কারণে। ফলে ডায়াবেটিসের চিকিৎসা শুরু হবার পূর্ব থেকে রোগী চোখে ঝাপসা বাওস্পিষ্ট দেখতে পায়। 

কারণ রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অতিরিক্ত পরিমাণে বেড়ে গেলে শরীর নিজেকে রক্তের গ্লুকোজের অতিরিক্ত মাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নেবার চেষ্টা করে। ফলের ডাইবেটিসের চিকিৎসা শুরু হবার পূর্বে শরীর আর্দ্রতা শূন্য বা শুষ্ক হয়ে পড়ে। আর চিকিৎসা শুরু হবার পূর্বে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা যখন স্বাভাবিক হতে শুরু করে তখন চোখের তরলের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। সে কারণেই চিকিৎসা শুরু হবার পরেও সাময়িকভাবে চোখের দৃষ্টি শক্তি ঝাপসা হয়ে যায়।

চোখের ছানি

একজন ব্যক্তির যদি অনেক দিন ধরে ডায়াবেটিস এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেশি থাকে তবে সেই ব্যক্তির চোখে ছানি হবার সম্ভাবনা আছে। কারণ রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেশি থাকার ফলে চোখের লেন্স ধীরে ধীরে ঘোলাটে হয়ে যায়। ফলে চোখের পিছনে বা রেটিনা পর্যন্ত সে আলো প্রবেশ করতে পারে না। 
এজন্য রোগী তার চোখ দিয়ে ভালোভাবে দেখতে পায় না এবং সে ধীরে ধীরে তার দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে ফেলে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য রোগীর চোখ অপারেশন করে ক্ষতিগ্রস্ত লেন্সটিকে সরিয়ে তার পরিবর্তে প্লাস্টিকের বা কৃত্রিম লেন্স লাগানো হয়ে থাকে।

রেটিনোপ্যাথি কি

চোখের পেছনের দিকের একটি স্তরের ক্ষতিতে রেটিনোপ্যাথি বলা হয়। একজন ডায়বেটিসে আক্রান্ত রোগীর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা যদি সব সময় বেশি থাকে, তবে চোখের এই স্তরের ছোট রক্ত বাহির শিরা গুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে শিরা গুলির মধ্যে ছোট ছোট ফোসকা হয় এবং তা ফেটে গিয়ে চোখের ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়।

কখনো কখনো শিরাগুলি ছিদ্র হয়ে এক ধরনের তরল চুইয়ে উপিভাগে জমা হয়ে শক্ত বা সাদা তলানি হয়ে যায়। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত একজন রোগী যখন রেটিনোপ্যাথি হয় তখন রেটিনার গুরুতর ক্ষতি হয়। আর শরীর তখন রক্ত সরবরাহের উন্নতির জন্য নতুন রক্ত বাহির শিরা তৈরি করার চেষ্টা করে। কিন্তু এই নতুন শিরা গুলি দুর্বল হয় এবং সহজেই এর থেকে রক্ত ঝরে ফলে এটা গুরুতরী স্থায়ী দৃষ্টিহীনার কারণে ঘটায়। 

এক্ষেত্রে চোখের ক্ষতি কমানোর জন্য লেজার রশি দিয়ে এর চিকিৎসা করা যেতে পারে। তবে চোখের সব ধরনের ক্ষতিতে এই চিকিৎসা সফল হয় না। তাই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রতিটি রোগীর ক্ষেত্রে অবশ্যই এবং অন্যান্য সকলের ক্ষেত্রে নিয়মিত চোখের পরীক্ষা করানো অত্যন্ত জরুরি। যাতে করে চোখের কোন ধরনের ক্ষতি হয়ে থাকলেও খুব দ্রুত তার চিকিৎসা করা সম্ভব হয়।

কিডনির সমস্যা

কিডনি মানবদেহে ফিল্টার বা ছাত্রের মত কাজ করে থাকে যা শরীর থেকে আবর্জনা বের করতে সাহায্য করে। কারো শরীরে ডায়াবেটিস থাকলে রক্ত গ্লুকোজের মাত্রা বেশি হওয়ার ফলে কিডনির এই ফিল্টার পদ্ধতির ক্ষতি হতে পারে। ফিল্টার পদ্ধতিতে ক্ষতি হলে ময়লা ছাড়াও ভালো প্রোটিনের শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। 

এটা প্রসব পরীক্ষার মাধ্যমে ধরা পড়ে। কখনো কখনো প্রসাবে ইনফেকশন হওয়ার কারণেও এই প্রোটিন বের হতে পারে। ডাক্তার এটা পরীক্ষা করে দেখেন। যদি কিডনির কোন ক্ষতির জন্য এই প্রোটিন বের হয়ে থাকে, তাহলে শরীরের অন্য কোন পরিবর্তন হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য আপনাকে অবশ্যই আরো অনেক বেশি নিয়মিত ভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ মনে রাখবেন যেসব ডাইবেটিস রোগীদের রক্তচাপ বেশি থাকে তাদের কিডনির ক্ষতির সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।

নার্ভ বা স্নায়ু সমস্যা কি

কোন ব্যক্তির যদি ডায়াবেটিস নিউরোপ্যাথি হয়ে থাকে, তবে তার ফলের চেয়ে ব্যক্তিস্নায়ক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকে এবং এর ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির নানা ধরনের লক্ষণ বা অপসর্গ অনুভব করে যেমন, কিছু কিছু স্নায়ু রয়েছে যা তা কম্পন এবং ব্যথা অনুভব সাহায্য করে। তবে ডায়াবেটিসে এস নাই ওগুলির ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রথম অবস্থায় রোগী বুঝতে পারবেন না যে তার কোন সমস্যা হচ্ছে।

এক্ষেত্রে শুরুতে সাধারণত ব্যথা হয়, কিন্তু পরবর্তীতে শরীরের আক্রান্ত অংশে কোনরকম ব্যথা বা তাপের অনুভূতি থাকে না। ফলে পায়ে আঘাত পেলে রোগী সহজে বুঝতে পারেন না। যার কারনে আক্রান্ত অংশের অযত্নের কারণে নিউরোপ্যাথিক আলসার পর্যন্ত হতে পারে। শরীরের বিভিন্ন প্রকাশনা এর মধ্যে আবার এমন কিছু স্নায়ু রয়েছে যা হাত এবং পায়ের মাংসপেশি নিয়ন্ত্রণ করে এবং সেগুলোর কার্যকারিতা ঠিক রাখে। 

কিন্তু ডায়াবেটিস হলে এইচ্নায়ুর গুলো দুর্বলতার কারণে মাংসপেশিগুলো ক্রোমোজ দুর্বল হয়ে থাকে এবং এই দুর্বলতার তীব্র ব্যাথাসহ প্রকাশ পেয়ে থাকে। ইহা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পায়ের সামনে মাংসপেশিগুলোতে অনুভূত হয়। এছাড়াও অনেক সময় শরীরের ওজন খুব বেশি কমে গিয়ে এমন অবস্থা হতে পারে যার ফলে রোগী বিছানা থেকে উঠার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। 

এগুলো ছাড়াও শরীরের ভেতরে এমন কিছু স্নায়ু রয়েছে যা খাদ্য হজম করায় সাহায্য করে থাকে। কিন্তু ডায়াবেটিসের কারণে স্নায়ু গুলো দুর্বল হয়ে খাদ্য গ্রহণে অসুবিধা দেখা দিয়ে থাকে। তাছাড়া ডায়াবেটিসের কারণে প্রসবের সমস্যা এবং যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়াসহ আরো অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

অন্যান্য সমস্যা

গ্লুকোজের অস্বাভাবিক বিভাগের ফলে রক্তনালীরও কতগুলো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। যেমন পরিবর্তিত প্রফেসর তা অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন এবং বৈশ্বিক নালের সাধারণ গঠনের পরিবর্তন। এছাড়াও এর ফলে রক্তের স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হয় এবং কোষের প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায়। এগুলো ছাড়া অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে আক্রান্ত রোগীর রক্তনালীর দেয়াল শক্ত হয়ে হৃদরোগের বা মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণের অথবা স্টকে ঝুঁকি অনেক গুণ বেড়ে যায়। 

তবে একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী যদি তার রক্ত গ্লুকোজের পরিমাণ সঠিক মাত্রায় বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন তবে সেটা তার শরীরে ডায়াবেটিসের সাথে সম্পর্কিত জটিলতা গুলি ঝুঁকি অনেক সময় কমতে পারে।

লেখকের মন্তব্য

ডায়াবেটিসে এমন একটি রোগ যা কখনো সম্পন্নভাবে সারানো যায় না তবে নিয়মিত চিকিৎসার মাধ্যমে এরকম সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এ বিষয়ে চিকিৎসক সর্বদা রোগীকে সাহায্য করে থাকেন। ডায়াবেটিস থেকে চোখের বিভিন্ন সমস্যা কি? এবং অন্যান্য সমস্যা সম্পর্কে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। 

এ বিষয়টি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অন্যদের সাথে শেয়ার করবেন এবং একটি লাইক ও কমেন্ট করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url