আমের মুকুল ঝড়ার কারণ ও তার প্রতিকার কি
আমের মুকুল ঝরার কারণ ও তার প্রতিকার কি? প্রিয় পাঠক আজ আপনাদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। কেন আমের মুকুল ঝরে ও তার প্রতিকার গুলো কি কি? বিষয়টি জানতে হলে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আম হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থকারী একটি ফল। বাংলাদেশের ফলের রাজা আম এবং আম একটি গ্রীষ্মকালীন ফল সাধারণত মার্চ মাসের দিকে আম গাছে মুকুল আসা শুরু করে।, একটি মুঘলের অনেক পরিমাণে ফুল ধরে থাকে এবং সেই ফুলে গুটি আম হয়।
আমের মুকুল ঝরার কারণ ও তার প্রতিকার কি
আম গাছের মুগলের গন্ধে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের প্রতিটি জায়গায় আম গাছে মুকুল এসেছে কিন্তু নানা কারণে সেসব মুকুল ঝরেও যায় এবং এতে ক্ষতি হয় আম চাষীদের।, যথাযথ সময়ে রোগ ও পোকামাকড় দমনে যদি ব্যর্থ হন তাহলে মারাত্মকভাবে কমে যেতে পারে আমের মুকুল এবং আম কম ফলন হবে।
আরও পড়ুনঃ ডালিম বা বেদেনা ফল খাওয়ার উপকারিতা কি
আমের মুকুলঝরার কারণ ও তার প্রতিকার কি বিষয়টি সবারই জানা প্রয়োজন।, কেন আমার মুকুল ঝরে যায় ও তার প্রতিকার গুলো কি কি। সাধারণত আম চাষ করতে গিয়ে আমচা সিরাজ যেসব সমস্যায় পড়ে থাকেন তার মধ্যে আমের গুটি ঝরা হলো অন্যতম বড় সমস্যা। আমের ভালো ফলন পাওয়ার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার আম চাষীদের। আম গাছে মুকুল থেকে গুটি আসার পর বিভিন্ন কারণে গুটি ঝরে যায়।
আমের মুকুল ঝড়ার কারণ কি
আমের মুকুল ঝরার কারণ কি বিষয়টি জানা বিশেষ করে আম চাষীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য আম চাষীদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়। এর জন্য আমের মুকুল ও গুটি ঝরা বিশেষভাবে অন্যতম। সাধারণত আম গাছের মুঘল আসার পর গুটি আসার সময় বিভিন্ন কারণে ঘুটে ঝরে যায়।
আর সেজন্য আম চাষিদের অনেক সতর্ক থাকতে হবে। যেন পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সাধারণত আমতাছে এক একটি মুকুলে ১০০০ থেকে ৬ হাজার পর্যন্ত পুরুষ ও স্ত্রী ফুল ধরে থাকে। যার মধ্যে প্রাথমিক অবস্থায় প্রতি ঠকায় বিভিন্ন জাত ভেদে ত্রিশটা আমের গুটি ধরতে দেখা যায়।
আমি গুটি আসার ১ থেকে দেড় মাসের মধ্যে একটি থোকায় দু একটি গুটি থাকে। অন্যগুলোর বিভিন্ন কারণে ঝরে পড়ে। কিছু কিছু থোকায় 5 থেকে 6 টি আম ধরতে দেখা যায় সেজন্য আমের আকার ছোট হয়।
মাটিতে রসের অভাবের কারণ
মাটিতে যদি রসের অভাব দেখা দেয় তাহলে আমের গুটি ঝরা সম্ভাবনা থাকে।, বিশেষ করে মাচো এপ্রিল মাসে অনেক বৃষ্টি হওয়ার জন্য মাটিতে রসের অভাব দেখা যায় ।যার কারণে আমের গুটি সময় থেকে বৃদ্ধি পর্যন্ত ঝরে যায়।, দাসের গোড়ায় যদি রস না থাকে তাহলে পানির অভাবে বার রহস্যের অভাবে আম গাছের গুটি থেকে গুটি ঝরে যায়।
,আমের গুটি যেন না ঝরে সেই জন্য ১২ থেকে ২২ দিন পর দুইবার ১০ লিটার পানিতে ৬ গ্রাম হারে বুড়ি ক্যাসিড স্প্রে করলে আমের গুটি ঝরা কমে যায়। এছাড়া ফুল ফোটার সময় জিভেরেলিক এসিড প্রতি লিটার পানিতে ৫০ মিলিগ্রাম হাড়ে স্প্রে করলে আমের গুটি ঝরা থেকে বাঁচা যায়।
প্রথম শেষ দেওয়ার পর বৃষ্টি যেন না হয় সেজন্য 15 থেকে 16 দিন পর পর গাছে গোঁড়ায় পানির শেষ দিতে হবে ।শেতের পাশাপাশি হরমোন দিলেও আমের গুটি ঝরা বন্ধ হয়ে যাবে। আমের গুটি মটর দানার মত হলেও প্রতি লিটারে বিশ গ্রাম ইউরিয়া সার অথবা প্রতি চার থেকে পাঁচ লিটার পানিতে দুই মিলি লিটার হারে প্লানো ফিক্স হরমোন পানিতে মিশিয়ে, সামান্য পরিমাণে সূর্যের আলো আমের গুটিতে হালকা ভাবে ঝাড়া কমে যায়।
বিভিন্ন পোকার আক্রমণ কি
আমের ফুলে যখন গুটি আসে তখন হবার প্রকার আক্রমণ হয়ে থাকে এ ধরনের প্রকারপূর্ণ বয়স্ক মত ও কীরা সেই গুটির রস থেকে শোষণ করে নেয়, সেজন্য আমের গুটি ঝরে পড়ে। আমের গুটির এ পোকা দূর করার জন্য গুটির মটর দানার মত হলেও কীটনাশক ও ছত্রাক নাটক একসাথে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করে নিতে হবে।
সাইপর ম্যাট্রিন ১০ ই সি বালেমদা সায়হালাথ্রিন দুই থেকে পাঁচ ই সি বা ফ্যান ভেলার রেট কীটনাশক একসাথে মিলি লিটার প্রতি হারে পানিতে এবং মেইনকোজের আসে প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে নিয়ে আমের গুটিতে স্প্রে করে নিতে হবে।
এতে করে পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচা যাবে এবং আমের গুটি পরা বন্ধ হয়ে যাবে।, এছাড়া গাছের বিভিন্ন শুকনো ডাল গুলো কেটে ফেলে দিতে হবে এবং বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিলে আমবাগান বা গাছ পরিষ্কার করে রাখতে হবে আমের ফল যদি ছিদ্রকারী প্রকার আক্রমণ হয়ে থাকে তাহলে মার্বেল আকারের বড় গুটিগুটি আম গুলো ঝরে পড়ে যেতে পারে।
রোগের আক্রমণ হলে
সাধারণত মাগো ফাল্গুন মাসে আম গাছের মুকুল গুটি হয়ে থাকে এ সময় ছত্রাক জনিত বিভিন্ন রোগের আক্রমণ হতে পারে আর এ কারণে দুটি ঝরে যায় এসব ছত্রাক জনিত রোগের পাউডারী মিলডিউ অন্যতম বড় সমস্যা আক্রান্ত জায়গায় পাউডারের গুড়ার মত এক ধরনের জিনিস দেখা যায়।
যেটি বিভিন্নভাবে আক্রান্ত অবস্থায় সাদা অংশ পাউডারের মুকুল ঢেকে যাবে এবং আমের গুটি পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে এছাড়াও রোগের কারণেও আমের গুটি ঝরে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকেমুকুল অথবা ফুল এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হলে সে জায়গাটি কালো হয়ে আমের গুটি ঝরে যাবে।
আরও পড়ুনঃ এন্টিবায়টিক রেসিস্টেনস কি
গুটি অথবা ছোট জায়গায় আক্রান্ত হলে আমের শরীরে ধূসর বাদামি এবং কালো দাগ পড়ে যায়। অনেক বেশি আক্রান্ত হলে আমের গুটি ঝরে যাবে আমের মুকলে এ ধরনের রোগের আক্রমণ হলে গাছের সব মুকুল নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
প্রাকৃতিক কারণ কি
সাধারণত আমের মুকুল ছাড়া বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণ হয়ে থাকে। আম গাছে এক একটি মুকূলে এক হাজার থেকে ৫ হাজার পর্যন্ত পুরুষ ও স্ত্রী ফুল ফুটে থাকে। তার মধ্যে প্রাথমিকভাবে প্রতিটি থোকায় ১ থেকে ৩০ টি আমের গুটি ধরতে দেখা যায়।
সাধারণত গুটি আসার ২৪ থেকে ৫০ দিনের মধ্যে প্রতি ধোকায় ১ থেকে ২ কোটি গুটি হয়ে থাকে অন্যগুলো প্রাকৃতিক এবং অভ্যন্তরীণ কারণে ঝরে যায় কিন্তু কোন কোন মুকূলে চার থেকে পাঁচটি আম ধরতেও দেখা যায় এক্ষেত্রে আমের আকার ছোট হয়ে থাকে।
আমের মুকুল ঝরার প্রতিকার কি
আমের মুকুল ধরার প্রতিকার অন্যতম। অতিরিক্ত গুটি যাতে ঝরে না পরে এবং আমের আকার ছোট হয় আমের গুণগত মান ও ফলন কমে যায়। গাছে যদি একটি করে আমের মুকুল থাকে তাহলে পরের বছর প্রতিটি মুকুলে একটি করে যদি আম ধরে তাহলে ওই বছর আমের অনেক বেশি ফলন হয়ে থাকে।
তবে সবকটি মুকুলের আমাশার জন্য ফুল ফোটার দশ দিন পর দুইবার ১০ লিটার পানিতে ৬ গ্রাম হারে ভরি ক্যাসেট করলে অনেক বেশি ফলন পাওয়া যায় এছাড়া ফুল ফোটা সময় প্রতি লিটার পানিতে ৫০ মিলিগ্রাম হারেজ করলে আমের গুটি ঝরা কমে যায়।
গাছে মুকুল আসার সময় যেমন কোনো স্প্রে করার দরকার নেই তেমনি মুকুল ফোটা অবস্থায় কোন রকম স্প্রে করার প্রয়োজন হবে না। কারণ সে সময় প্রচুর পরিমাণে উপকারী পোকা আসার কারণে আম বাগানে পড়া গায়নের সাহায্য করে।সাধারণত গাছে মুকুল আসার পর দুইবার স্প্রে করলেই গাছে প্রচুর পরিমাণে আম আসবে।
ফুল ফোটার সময় কি করতে হবে
যদি মেঘলা ও কুয়াশায় ঘেরা আবহাওয়া থাকলে পুষ্প ম পাউডারী মিল ডিউ এন্ট্রাফ নজ রোগের আক্রমণ হতে পারে এ থেকে গাছের পাতা কচি ডগা মুকুল ও গুটি আমে কালো দাগ পড়তে পারে বিভিন্ন ভাবে প্রতিকার হচ্ছে যেমন মুকুল আসার 10 থেকে 12 দিনের মধ্যে একবার প্রতি লিটার পানির সাথে।
এক মিলিলিটার রিপ কর্ট বা সিম্বুজ ১০ এসে এবং শূন্য .৫ মিলি লিটার ফিল্ড ২০৫০ ইসি একসাথে মিশিয়ে আমের মুকুল পাতা কাণ্ডে স্প্রে করে নিতে হবে।ফুল ফোটার সময় এই কাজগুলো করলে আমের মুকলে কোন সমস্যা হবে না।
প্রাকৃতিক পরাগায়ন কি
সাধারণত প্রাকৃতিক পরাদায়ন হচ্ছে মৌমাছি পালন বা প্রজাপতি পালন এর মধ্যে হয়ে থাকে।, এছাড়া চারিদিকে ফুলের গাছ বোনা এবং বাগানে বিভিন্ন ধরনের আম গাছ লাগানো দরকার হয়। আম গাছের মুঘল আসার সময় হপার পোকা কচি অংশের রস চুষে খায়।
এর কারণে মোগল শুকিয়ে ঝরে পড়ে যায় এছাড়া রস চষা সময় পোকা আঠালো পদার্থ মিশ্রিত করে ফেলে যাতে করে ফুলে পরাগরেণু আটকে পরাদায়নে সমস্যা ঘটে। এ পোকা দমনের জন্য রেপ কর বা ও টিল্ট আগের নিয়মে স্প্রে করে নিতে হবে যাতে করে এসব সমস্যা না হয় এর মাধ্যমেও সব দূর করা যায়।
পূর্ণাঙ্গ ফুল পেতে করনীয় কি
পূর্ণাঙ্গ ফুল পেতে যা যা করণীয় হলো।, ত্রুটিপূর্ণ পূর্ণাঙ্গ ফুল বরধ্বীন শুভ্রনের পুষ্টিহীনতা দূর করার জন্য মুকুল ধরার 15 থেকে 16 দিন আগে উপযুক্ত নিয়মে সার দিতে হবে যেন একই ডালে অনেক ফল ধরলে ফলের পুষ্টির জন্য ফলগুলোর প্রতিযোগিতা করে বলে ফল ঝরে যায় অতিরিক্ত ফল পাতলা করে দিতে হবে হরমোন ও রাসায়নিক পদার্থ স্প্রে করলেও আমের মুকুল এবং, গুটি আম পড়া থেকে রক্ষা করা যায়।
আমে গুটি বাধার পর করণীয় কি
আমের মুকুলে গুটি বাধার দুই সপ্তাহ পর ২০ পিপিএম মাত্রায় চব্বিশ ডি স্প্রে করলে অনেক ভালো ফল পাওয়া যাবে ।আমের গুটি মসুর দানার সমান হলেও 10 লিটার পানিতে দুই থেকে তিন মিলি লিটার প্লানোফিক্স স্প্রে করলে অনেক ফল ঝরা থেকে বাঁচা যায়।আমগাছে ঠিক সময়ে ঠিকভাবে সার পোকামাকড় রোগ জীবাণু ইত্যাদি ব্যবস্থা না করলে আমের ফুল ঝরে যাবে।
এবং ফল ঝরে যাবে ফলে আমের উৎপাদন নিয়ে ব্যাহত হবে। দরকার হলে ছোট চারা গাছে খুঁটি বেঁধে নিতে হবে শোষক পোকা দূর করতে আমের মুকুল যখন তিন থেকে চার সেন্টিমিটার লম্বা হয়, তখন প্রথমবার আম যখন ছোট দানা আকার ধারণ করে তখন দ্বিতীয়বার সাইবার মেট্রিন জাতীয় কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে এবং 10 লিটার পানিতে সেটি মিশিয়ে স্প্রে করে নিতে হবে।এতে করে আমের মুকুল বা গুটি ঝরে পড়বে না।
ফুল আসার আগে করনীয় কি
সাধারণত আম গাছে ফুল আসার 15 দিন আগ পর্যন্ত পানি সেচ দিতে হবে । টি এসপিএল ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম করে দিতে হবে এবং দুই থেকে তিন বছর বয়সের মধ্যে আম গাছের দিতে হবে। চার থেকে পাঁচ বছর বয়সের গাছে ৩০০ থেকে ৩৫০ গ্রাম দিতে হবে। , ৬ থেকে ৭ বছর বয়সের গাছের ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ৮ থেকে ৯ বছর বয়সের গাছে ৫০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ও দশ বছরের উপরে ৫৫০ থেকে ১২০০ গ্রাম পতি গেছে দিতে হবে।
লেখক এর মন্তব্য
আমের মুকুল ঝরার কারণ ও তার প্রতিকার কি?এই বিষয়ে আপনারা সঠিক তথ্য পেয়েছেন।আম আমাদের অর্থকারী ফসল এবং এটি একটি সুস্বাদু ফল যা সবারই পছন্দ।আমের মুকুল কেন ঝরে যায় এবং তার প্রতিকার কি এই সকল বিষয়ে যদি সঠিক তথ্য পেয়ে থাকেন তাহলে লাইক কমেন্ট এবং শেয়ার করবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url