OrdinaryITPostAd

কেন খাবেন কিনোয়া এর উপকারিতা কি

সাধারণত কিনোয়াকে সুপার ফুড বলা হয়। কেন খাবেন কিনোয়া এর উপকারিতা কি? প্রোটিন, ফাইবার, ও প্রচুর ভিটামিনে ভরপুর কিনোয়া। বর্তমান বিশ্ব বাজারে খুব জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। আরও বিস্তারিত জানতে হলে আর্টিকেল টি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
কেন খাবেন কিনোয়া এর উপকারিতা কি

সুপার ফুড কিনোয়া ছোট বড় সব ধরণের মানুষ খেতে পারবে। এটি বিশেষ করে ডায়বেটিস রোগীদের জন্য খুব উপকারি একটি খাবার। কিনোয়া এক ধরনের চাল এছারা এটি শ্যামা বা কাউন নামে পরিচিত।

কেন খাবেন কিনোয়া এর উপকারিতা কি

আমরা অনেকেই হয়তো জানিনা কিনোয়া কি। কেন খাবেন কিনোয়া এর উপকারিতা কি? পুস্টিগুনে ভরপুর এবং এতে আছে ভিটামিন, মিনারেল, আন্টিঅক্সিডেন্টের ঘনত্ব যা অন্যান্য খাবারের থেকে অনেক বেশি থাকে। এই খাবার খেলে শরীরের দুর্বলতা দূর করে দেয় এবং শরীরকে সুস্থ করে।

সুপার ফুড নামটি মূলত কোন বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞায়িত শব্দ নয়, এটি কে মার্কেটিং কৌশল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। তার পরবর্তীতে অনেক গবেষণার মাধ্যমে বিভিন্ন খাবারের সাথে কি নেওয়া একটি সুপার ফুড খাবার হিসেবে পরিচিত হয়েছে।
এটি সাধারণত ক্যান্সার, হৃদরোগ, এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। কি নেওয়া ধান গম এর মত এক ধরনের বীজ। ভাত, রুট্‌ চাল, ডাল এবং অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি কিনোয়া খাবার খাওয়া যায় এবং এটি একটি সুষম খাদ্য।

কেন খাবেন কিনোয়া

কিনোয়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক বেশি উপকারী এবং এটি ফাইবারের সমৃদ্ধ যার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।এছাড়া কিনোয়া প্রোটিনের সমৃদ্ধ যা বেশি গঠন এবং মেরামত করতে সাহায্য করে। কেনুয়া মানুষের ওজন কমাতে সাহায্য করে। এর প্রোটিন সমৃদ্ধ যা মানুষের পেশী গঠন এবং মেরামত করতে সাহায্য করবে।

হজম শক্তি বাড়াবে হেলিয়া রোগীদের জন্য নিরাপদ এবং পুষ্টিকর এর বিকল্প নেই। হৃদরোগ এবং প্রদাহ রসে সাহায্য করবে। এজন্য কিনোয়া সুপার ফুড বলা হয় কারণ এটি মানুষের বিভিন্ন উপকার করতে সাহায্য করে।  

কিনোয়া কি

কিনোয়া এক ধরণের ফুলের বীজ। হোল গ্রেন কাউন্সিলরের তথ্য অনুসারে, কিনোয়া হল গ্লূটেন ফ্রি হোল গ্রেন কার্বোহাইড্রেট। এতে যেমন কার্বো আছে তেমনি প্রোটিনে ভরপুর।সাদা, লাল, ও কাল তিন রকমের পাওয়া যায় কিনোয়া। স্যালাদ জাতীয় খাবার এর জন্য সাদা কিনোয়া ব্যবহার করা যায়। এবং এটি রান্না করার পড়ে একি রকম দেখতে লাগে।

লাল সাদার থেকে কাল কিনোয়া বেশি মিষ্টি হয়।বহু যুগ আগে থেকেই ইনকার সভ্যতার সময়ে কিনওয়ার কথা পাওয়া যায়। গম জব বাজড়ার মতই কিনোয়া ছিল সে সময়ে স্টেপল ফুড। অত্যন্ত সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণের কারণে এর নাম দেওয়া হয়েছিল মাদার অফ অল গ্রেনস। ইনকার সভ্যতার সময়ে কিনোয়াকে মনে করা হতো এটি খুব পবিত্র একটি খাবার।

প্রতি বছর এই গাছের বীজ সে সময়ের রাজা নিজ হাতে রোপন করতেন। এবং এই কিনোয়া তৈরি সরঞ্জাম নিয়ে বীজ রোপনের একটি উৎসব ও হতো সে কালীন সময়ে। আসলেই সেটি সোনার ফসল ফলানো হতো বলে মনে করা হয়। কিন্তু কালের পরিবর্তনে বিভিন্ন খাবারের সাথে কি নেওয়া শব্দটি হারিয়ে গেল। 

পরে সত্তরের দশকের গোড়ায় আবার নতুন করে আবির্ভাব ঘটল এই বহুগুণ সম্পন্ন কি নেওয়া সুপারফুড। এবং এটি আধুনিক যুগে নতুন করে এলো ডায়েট এর মাধ্যমে।

কিনোয়া কোথায় পাওয়া যায়

কিনোয়া এর জন্মস্থান দক্ষিণ আমেরিকার পাহাড়ি অঞ্চল হলেও বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে চাষাবাদ হচ্ছে। শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় পাঁচ বছর গবেষণার পর প্রাথমিক পর্যায়ে পটুয়াখালী লালমনিরহাট এবং কুড়িগ্রাম জেলায় কিনোয়া চাষ হয়। এবং এটি জনপ্রিয় হওয়ার কারণে দেশের নীলফামারী বগুড়া সহ অন্যান্য জেলায় চাষ করা হচ্ছে। 

কি নেওয়া চাষের সঠিক সময় মার্চ থেকে এপ্রিল এছাড়া এটি চাষের আদর্শ সময় হচ্ছে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝির দিকে। কেনোয়া যেহেতু একটি সুষম পুষ্টিকর খাদ্য এবং এর চাহিদা দেশ-বিদেশে রয়েছে, তাই বাংলাদেশের কৃষকদের কিনেওয়া চাষ করতে উৎসাহ করতে পারলে কৃষকদের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরও পোস্টের তালিকা

কিভাবে কিনোয়া চাষ করা হয়

কিনোয়া চাষের জন্য কোন স্যারের প্রয়োজন হয় না, সাধারণত জৈব সার ব্যবহার করেই কিনোয়া চাষ করা সম্ভব হয়। এটি সাধারণত শুষ্ক মাটি এবং শীত জলবায়ুতে ভালো জন্মে। বীজ বপণের সঠিক সময় হল বসন্তের শেষ দিকে গ্রীষ্মের শুরুর দিকে। সার প্রয়োগ বর্ষার আগেও পরে করা উচিত। 

কিভাবে পরিচর্যা করা যায়? এই গাছের আগাছা পরিষ্কার করার জন্য কমপক্ষে প্রতি মাসে একবার নিরানি দিতে হবে এবং প্রয়োজন বোধে শেচ দিতে হবে। কিনোয়া সাধারণত উচ্চ পার্বত্য এলাকা গুলোতে খুব ভালো জন্মে থাকে। এবং এটি বিশেষ করে বেল এ দোআশ মাটি যেখানে পানি নিষ্কাশন ভালো হয় সেখানে কিনোয়া ভালো জন্মে বলে ধারণা করা হয়।

মাটির পি এইচ মান ৬-৭.৫ এর মধ্যে যদি হয় তাহলে কিনোয়া চাষের জন্য খুব ভালো হবে। কিনোয়া চাষ সম্পর্কে আরও বিষয়ে জানতে চাইলে আপনি কৃষি বিশেষজ্ঞ বা কোন কৃষি অফিসে গিয়ে পরামর্শ নিতে পারেন।

কিনোয়ার উপকারিতা কি

কিনোয়া সাধারণত একটি পুষ্টিকর খাদ্য এবং এটি উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার।সালাদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন খাবারের সাথে এটি খাওয়া যায়। প্রোটিন ভিটামিন বি ও ফাইবারে যুক্ত কিনোয়া ডায়েটের জন্য উপকারি খাবার। এছাড়া হাড়ের গঠন, ওজন কমাতে সাহায্য করে, কলেস্ট্রাল যুক্ত খবার এটি।

ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রন

সুপার ফুড কিনোয়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এটি ফাইবারের সমৃদ্ধ যার রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এছাড়া নিম্ন গ্লাইসেমিক ইনডেক্স রক্তে শর্করা মাত্রা আস্তে আস্তে বাড়তে শুরু করে যার কারণে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

রক্তস্বল্পতা দূর করে

মানুষের শরীরে বিভিন্ন সমস্যা জনিত কারণে রক্তের পরিমাণ কম থাকতে পারে। কিনোয়া খাবারের মধ্যে রয়েছে খনিজ উপাদান যেটি মানুষের শরীরে হিমোগ্লোবিন বা রক্ত তৈরি করতে সাহায্য করবে। এটি রক্তের স্বাভাবিক অক্সিজেন সরবরাহ করবে এবং লোহিত রক্ত কণিকাগুলি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।

মাইগ্রেনের সমস্যা থেকে মুক্তি 

অনেক মানুষ আছেন যারা মাইগ্রেনের সমস্যায় ভোগেন। বিভিন্ন চিকিৎসা ও ওষুধ খেয়েও মাইগ্রেনের সমস্যা দূর হয় না। মাইগ্রেনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে কিনোয়া খেলে এই সমস্যা দূর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ এটি মস্তিষ্কের স্বাভাবিক রক্ত চলাচল করতে সাহায্য করে 

এবং মস্তিষ্কের নালী পেটকে অনেকক্ষণ ভর্তি রাখেগুলোকে ঠান্ডা রাখে, যাতে করে মাইগ্রেনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া এটিতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম যার কারণে মাইগ্রেনের সমস্যা থাকলে মুক্তি পাওয়া যায়।

চুল ও ত্বকের জন্য

১/৪ কাপে কিনোয়া সয় মিল্কে সিদ্ধ করে, এর সাথে ৩ টেবিল চামচ টক দই, ২ টি ডিমের কুসুম, ও ২ ফোটা মিমসা এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিয়ে আপনার মুখে ও গলায় ১৫- ২০ মিনিট লাগিয়ে তারপর ধুয়ে ফেলুন। আপনার ত্বক ভালো হবে। কারণ কিনোয়া তে রেয়েছে প্রোটিন যা আপনার ত্বকে অনেক পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করবে। এছাড়া এতে এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় আপনার মুখে বলি রেখা থাকবেনা।

ওজন কমায়

যে সকল মানুষ অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চিন্তায় আছেন তারা কিনোয়া খেতে পারেন। কিনোয়া ফাইবারের খুব ভালো উৎস, এটি হজম শক্তি বাড়ায় এবং অনেকক্ষণ সতেজতা দিয়ে থাকে। কিনোয়া ভাত বা রুটির মত খুব সহজে হজম হয় না কারণ এটি পেটের ভেতের গেলে পেটকে অনেকক্ষণ ভর্তি রাখে এবং খাবারে বাড়তে চাহিদা কমিয়ে দেয়।

কিনোয়ার রন্ধন প্রণালী

কিনোয়া অনেকটা চাল গম ও জবের মত দেখতে তাই এর রন্ধন প্রণালী ও সেরকমও লাগে। কিনোয়া দিয়ে শালা থেকে শুরু করে বিরিয়ানি, রুটি, বার্গার,পিজা ইত্যাদি তৈরি করা যায়। এটি খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি স্বাস্থ্যকর খাবার। 
কিনোয়ার রন্ধন প্রণালী


কিনোয়া ভাতের থেকে তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয়ে যায়। এছাড়া এটি দিয়ে রুটি করতে চাইলে কিনোয়া ফ্লাওয়ার দিয়ে করা যায়। গরম পানি দিয়ে সাধারণ আটা মাখানোর মতো করে কি নেওয়া তৈরি করতে হবে।

লেখকের মন্তব্য

কেন খাবেন কিনোয়া এর উপকারিতা কি? কিনোয়া একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার এবং ফাইবার সমৃদ্ধ যা মানুষের শরীরের অনেক উপকার করতে সাহায্য করে। এটি উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার এবং এতে সম্পূর্ণ অ্যামিনো এসিড প্রোফাইল রয়েছে যার কারণে এটিকে নিরামিষ এবং নিরামিষ খাবারের জন্য সম্পন্ন করে তোলে। 

এছাড়াও এটি হজম শক্তি কমায় ডায়াবেটিস কমাতে পারে। এছাড়াও এতে রয়েছে বিভিন্ন ম্যাগনেসিয়াম ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস যা মানুষের কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং স্বাস্থ্য ভালো রাখে। কিনো একটি সুপার ফুড যা মানুষের বিভিন্ন উপকারে আসে। প্রিয় পাঠক আমার দেয়া সঠিক তথ্য যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করে পাশে থাকবেন।



  

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url