OrdinaryITPostAd

জাহান্নামের কঠিন আজাব থেকে মুক্তির উপায় কি

মহান আল্লাহতালা মানবজাতিকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। এবং তিনি সৎকর্মশীল ব্যক্তিদের জন্য তৈরি করেছেন জান্নাত ও অসৎ কর্মশীল ব্যক্তির জন্য করেছেন জাহান্নাম। জাহান্নামের কঠিন আজাব থেকে মুক্তির উপায় কি? বিষয়টি আপনাদের সাথে আলোচনা করব।
জাহান্নামের কঠিন আজাব থেকে মুক্তির উপায় কি


জান্নাতের শোক যেমন মানুষের কল্পনার বাইরে জাহান্নামের শাস্তি হতে এমনি মানুষের নিকট অকল্পনীয়।জাহান্নামে যাওয়ার প্রধান কারণ হলোই আল্লাহর সাথে কুফরী করা। যারা আল্লাহর সাথে কুফি করে তারা কখনো জান্নাতবাসী হবে না।

জাহান্নামের কঠিন আযাব থেকে মুক্তির উপায় কি

জাহান্নামের কঠিন আজাব থেকে মুক্তির উপায় হল ঈমানের ৬ টি আরকানের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা এবং সৎকর্ম করা। যারা সৎকর্ম করে আল্লাহ দেখানো পথে চলে তারাই জান্নাতবাসী হবে। এবং জাহান্নামের কঠিন আজাব থেকে মুক্তি পাবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, যারা বলে হে আল্লাহ নিশ্চয়ই

আমরা ঈমান আনলাম। অতএব আমাদের সকল পাপ আপনি ক্ষমা করুন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আজাব থেকে রক্ষা করুন। হে আমাদের প্রতিপালক, তুমি এসব অনর্থক সৃষ্টি করনি তুমিতো মহান পবিত্র। সুতরাং তুমি আমাদেরকে জাহান্নামের আজাব থেকে রক্ষা করো। হে আমাদের

আল্লাহ নিশ্চয়ই তুমি যাকে আগুনে প্রবেশ করাবে অবশ্যই তুমি তাকে অপমান করবে। আর জালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী থাকবে না। হে আমাদের রব নিশ্চয়ই আমরা শুনেছিলাম একজন আহবানকারীকে, যে ঈমানের দিকে আহবান করে যে, তোমরা তোমাদের রবের প্রতি ঈমান আন। 

তাই আমরা ঈমান এনেছি। হে আমাদের রব আমাদের সমস্ত গুনাহ সমূহ ক্ষমা করে দিন এবং আমাদের ভুল ত্রুটি, এবং আমাদের মৃত্যুর নেককার বান্দাদের সাথে। হে আমাদের রব আপনি আমাদেরকে তা প্রদান করুন যার ওয়াদা আপনি আমাদেরকে দিয়েছেন আপনার রাসূলগণের মাধ্যমে।

আর কিয়ামতের দিনে আপনি আমাদেরকে দিয়েছেন আপনার রাসূলগণের মাধ্যমে। কেয়ামতের দিনে আপনি আমাদের অপমান করবেন না। নিশ্চয়ই আপনি অঙ্গীকার ভঙ্গ করেন না উপরোক্ত আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনাই হলো জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের প্রধান মাধ্যম, যেটা

ছাড়া কোন নেক আমল আল্লাহতালার কাছে গ্রহণ হবে না। সুতরাং প্রথমে আল্লাহতালার প্রতি ঈমান আনতে হবে এবং তার সন্তুষ্ট লাভের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দেখানো পথে চলতে হবে। এতে আল্লাহতালার কাছে ইবাদত কবুল হবে এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করে জান্নাত লাভ করা হবে।

আল্লাহর প্রকৃত প্রেমিক যারা 

আল্লাহ তায়ালার প্রতিটি আদেশ ঠিকভাবে পালন করে এবং প্রতিটি নিষেধ কোন শর্ত ছাড়া বর্জন করে ও তার সাথে কোন শিরক করে না। তারা আল্লাহতালার প্রকৃত প্রেমিক যাদেরকে আল্লাহ জাহান্নামের কঠিন আজাব থেকে মুক্তি দান করবেন, না কখনোই।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর প্রকৃত প্রেমিক

যারা পৃথিবীর সব কিছু থেকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে বেশি ভালোবাসেন। সার্বিক জীবন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর আদর্শে যারা পরিচালিত করেন। প্রতিটি ইবাদত তার সুন্নত অনুযায়ী পালন করেন।ভালো কাজের দোহাই দিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর সুন্নতকে উপেক্ষা করে না

এবং তার ওপর মিথ্যা আরোপ করে না। তারাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর প্রকৃত প্রেমিক যারা জাহান্নামের আজাব থেকে মুক্তি পাবে। রাসূল সাঃ বলেছেন তোমরা আমার ওপর মিথ্যা আরোপ কোরো না। কারণ আমার ওপর যে মিথ্যা আরোপ করবে সে জাহান্নামের অধিবাসী হবে। তিনি আরো বলেন

তোমাদের নিকট বহু হাদিস বর্ণনা করতে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায় যে, যে ইচ্ছাকৃতভাবে আমার ওপর মিথ্যা আরোপ করে সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে বানিয়ে দেয়।

ইসলামের আরাকান সমূহ কি

এ সকল মানুষ আল্লাহতালাকে এক এবং অদ্বিতীয় বলে বিশ্বাস করবে এবং আল্লাহর যাবতীয় বিধি-বিধান ঠিকভাবে মেনে চলবে সে সকল মানুষ কখনোই জাহান্নামের অধিবাসী হবেন না। জাহান্নামী ব্যক্তিরা শাফায়াতের মাধ্যমে জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করবে। তবে সকল জাহান্নামী সাফায়েত লাভের
ইসলামের আরাকান সমূহ কি


সৌভাগ্য অর্জন করবে না। তারাই কেবল শাফায়াত লাভ করবে যারা বিভিন্ন পাপকর্মে লিপ্ত হলেও আল্লাহর সাথে শিরকে লিপ্ত হবে না। পৃথিবীর সৃষ্টি লগ্ন থেকে শুরু করে কিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছে এবং করবেন তাদের মধ্যে একমাত্র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম তার উম্মতের জন্য সর্বপ্রথম সুপারিশকারী হওয়ার মর্যাদা লাভ করবে। ইসলামের আরাকান সমূহ কি তা নিচে আলোচনা করা হলো।

সালাত আদায় করা- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বলেছেন, আমাদের ও মুনাফিকদের মধ্যে যে অঙ্গীকার রয়েছে সেটা হল সালাত আদায় করা। সুতরাং যে সালাত ত্যাগ করলো সে কাফের হয়ে গেল। তিনি আরো বলেন, বান্দার ও কুফরির মধ্যে পার্থক্য হল সালাত ত্যাগ করা। তবে এই কাফের গন

কালেমায়ে শাহাদাতকে অস্বীকারকারী কাফেরগণের মতো চিরস্থায়ী জাহান্নামী নয়। বরং কালেমার বরকতে নবী করিম সাঃ এর শাফায়াতের ফলে শেষ পর্যায়ে তারা একসময় জান্নাতে ফিরে আসবে। জাহান্নামের কঠিন আজাব থেকে মুক্তির উপায় কি? একমাত্র মুক্তির উপায় হল সালাত আদায় করা নিয়মিত।

যাকাত আদায় করা- যারা যাকাত আদায় করে তারা জাহান্নামের কঠিন আজাব থেকে মুক্তি পাবে। জাহান্নামের মধ্যে এমন সব ঘর রয়েছে যার বাইরের জিনিস গুলোর ভেতরের জিনিস সমূহ বাইরে থেকে দেখা যায়। সে সকল ঘর সমূহ আল্লাহতালার সেই ব্যক্তির জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন, যে ব্যক্তি

মানুষদের সাথে নম্রতার সাথে কথা বলে, ক্ষুধার্ত ব্যক্তিকে দান করে, যাকাত আদায় করে, পরপর সিয়াম পালন করে এবং রাত জেগে সালাত আদায় করে অথচ মানুষ তখন ঘুমিয়ে থাকে। সেই সকল মানুষই জান্নাতে অধিবাসী হবেন।

রমজান মাসে সিয়াম পালন করা- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বলেছেন, সিয়াম হল ঢালের মত, অর্থাৎ সিয়াম জাহান্নামের আগুন প্রতিহিত করা ঢাল। তিনি আরো বলেন, আল্লাহর আযাব হতে পরিতানে ঢাল সিয়াম তোমাদের মধ্যে কারো যুদ্ধে ব্যবহৃত ঢালের মত। যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায়

একদিন সিয়াম পালন করেন, আল্লাহ তার মুখ মন্ডল কে জাহান্নামের আগুন থেকে 70 বছরের রাস্তা দূরে সরিয়ে নেন। (সুবহানাল্লাহ) সুতরাং সিয়াম হল জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির অন্যতম উপায়।
আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা- যারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে তারা জাহান্নামের কঠিন আজাব থেকে

মুক্তি পাই। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বলেছেন, কাফের এবং তাদেরকে হত্যাকারী মুসলিম কখনোই একসঙ্গে জাহান্নামে অবস্থান করবে না। আল্লাহর পথে যে বান্দার দু পা ধুলায় মলিন হয় তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না এমন হয় না।

বেশি বেশি দান করা-বেশি বেশি দান ছদকা করা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করার অন্যতম মাধ্যম। এতে আল্লাহ সন্তুষ্ট হয় এবং ব্যক্তিকে জান্নাত দান করেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান করো তবে তা উৎকৃষ্ট। আর যদি গোপনে দান করো এবং দরিদ্রদেরকে প্রদান কর তবে তোমাদের জন্য

তা হবে কল্যাণকর। আর এর দ্বারা তিনি তোমাদের পাপ সমূহ মুছে দেওয়া হবে। এবং তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে যথাযথভাবে আল্লাহতালা খবর রাখেন। তাদের অধিকাংশ গোপন পরামর্শে কোন মঙ্গল নিহিত থাকে না। তবে যে ব্যক্তি সাদাকা করে সৎকর্ম করে, মানুষের মাঝে পরস্পরের সত্য

মীমাংসা করে, এবং যে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে এরূপ করে সে ব্যতীত আমি তাকে এর জন্য মহাপুরুষিত করব।

আল্লাহর নিকটে সর্বদা জাহান্নামের আজাব থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা- আল্লাহর নিকট সর্বদা জাহান্নামের কঠিন আজাব থেকে আশ্রয় প্রার্থনার জন্য নিচে একটি দোয়া দেয়া হলো।

বাংলা উচ্চারণ- রাব্বানা আ-তিনা ফিদ দুনইয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল আ- খিরাতি হাসানাতাও ওয়া কিনা আযা- বান্না-র।

অর্থ- হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দান করুন এবং আখিরাতেও কল্যাণ দান করুন। আমাদেরকে জাহান্নামের আজাব থেকে রক্ষা করুন।

বাংলা উচ্চারণ- রব্বি কিনা আযা- বাকা ইয়াওমা তাব আছু ইবা- দাকা
অর্থ- হে আমার প্রতিপালক তোমার আযাব হতে আমাকে বাঁচাও, যেদিন তোমার বান্দাদের প্রতি তুমি পুনরুত্থান ঘটাবে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, নিশ্চয়ই যে আল্লাহর সাথে শরীক করে, তার ওপর অবশ্যই আল্লাহ জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন, এবং তার ঠিকানা জাহান্নাম। আর জালেমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। ( সূরা মায়েদাহ ৫/৭২) যে ব্যক্তি আল্লাহকে শিরক করবে না সে জাহান্নামের কঠিন আজাব থেকে মুক্তি পাবে।

যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়তাল কুরসি সূরা পাঠ করবে সে ব্যক্তি মৃত্যুর পর জান্নাতের অধিবাসী হবে। (নাসাঈ ৫/ ৩৩৯, সিলসিলাহ সহিহাহ ৯৭২)

আপনার পাছন্দ হতে পারে এমন আরও পোস্ট 

রাসূল (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি ধারাবাহিকভাবে জোহরের আগে চার রাকাত এবং পরে চার রাকাত সালাত আদায় করবে, মহান আল্লাহ তাআলা তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেবেন। ( ইবনে মাজাহ ১১৬০, আবু দাউদ হাদীস ১২৬৯) 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহকে সন্তুষ্ট রাখার জন্য লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু বলে কেয়ামতের দিন সেই ব্যক্তি এমন ভাবে উপস্থিত হবে যেন জাহান্নাম তার জন্য হারাম হয়ে যাবে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজ র ও আসরের সালাত আদায় করবে সে ব্যক্তি জাহান্নামে প্রবেশ করবে না। অতএব জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তির উপায় হল নিয়মিত সালাত আদায় করা।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বলেছেন, যে কিয়ামতের দিন মানুষের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেক মানুষ নিজ নিজ ছাতকা। ধানের ছায়াতলে অবস্থান করবেনজাহান্নাম এত বড় এলাকা যেখানে ভিন্ন ভিন্ন শাস্তির জন্য রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন এলাকা আল্লাহতালা ঠিক করে রেখেছেন। সেগুলোকে সাত

ভাগে ভাগ করা হয়েছে যেমন। এক নার তথা আগুন, দুই জাহান্নাম তথা আগুনের গর্ত,তিন জাহিম তথা প্রচণ্ড উতপ্তত আগুন, চার সাইর তথা প্রজ্বলিত শিখা, পাচ সাকার তথা ঝলসানো আগুন,ছয় হুতামাহ তথা পিষ্টকারি সাত হাবিয়া তথা অতল গহর। 

লেখকের মন্তব্য

মনে রাখতে হবে যে সবাইকে একদিন মৃত্যুবরণ করতে হবে এবং পরকালে তার কৃতকর্মের প্রতিদান হিসেবে জান্নাত ও জাহান্নামে প্রবেশ করানো হবে। সেখানে মানুষ চিরস্থায়ীভাবে বসবাস করবে আর কখনোই তাকে মৃত্যুবরণ করতে হবে না। পরকালীন জীবনে স্থায়ী জীবন এবং সেই জীবনের সুখ লাভের

জন্য মৃত্যুর পূর্বে সংশোধন হতে হবে। সমস্ত পাপ কাজ ছেড়ে আল্লাহর ইবাদত করা, এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর দেখানো পথে চলা, এসব কিছু মেনে চললেই জাহান্নামের কঠিন আজাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এবং আল্লাহ আমাদের জাহান্নামের কঠিন শাস্তি থেকে মুক্তি দিবে। প্রিয় পাঠক

জাহান্নামের কঠিন আজাব থেকে মুক্তির উপায় কি? বিষয়টি পড়ে যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে লাইক কমেন্ট এবং শেয়ার করবেন।

                                                                                                                                                                                      


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url