ঘন কালো চুলের জন্য কেশরিয়া পাতা ও আমলার কার্যকারিতা কি
ঘন কালো চুলের জন্য কেশরিয়া পাতা ও আমলার কার্যকারিতা কি? আমাদের দৈনন্দিন কাজের ব্যস্ততার কারণে আমরা ঠিকমতো চুলের যত্ন নিতে পারি না। তাই স্বল্প সময়ে অল্প খরচে কিভাবে চুল ঘন কালো ও লম্বা হয়। আজকে আপনাদের সাথে সেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।
আমাদের বিভিন্ন কারণে চুল নষ্ট হয়ে যায় বা ঝরে যায়, ঠিকমত যত্ন না নেওয়ার কারণে,অতিরিক্ত হেয়ার স্টাইল, এছাড়াও নানা শারীরিক সমস্যার কারণে চুল ঝরে যায় বা নষ্ট হয়ে যায়। আপনি যদি সঠিকভাবে চুলের নিয়মিত যত্ন নিন তাহলে আপনার চুল ঝরে পড়া বা নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা পাবে।
ঘন কালো চুলের জন্য কেশরিয়া পাতা ও আমলার কার্যকারিতা কি
ঘন কালো চুলের জন্য কেশরিয়া পাতা ও আমলার কার্যকারিতা কি? বিষয়টি হয়তো অনেকেরই জানা আছে। কিন্তু কিভাবে এর ব্যবহার করতে হয় তা হয়তো অনেকেই জানেন না। চুলের যত্নে কেসরিয়া পাতা ও আমলার কার্যকারিতা অপরিসীম যা বলেও শেষ করা যাবে না। কারণ কেশরিয়া পাতায় এমন
কতগুলি গুণ আছে যেগুলি শুধু চুল নয় মানুষের শারীরিক সমস্যাও দূর করে দেয়। এদিকে আমলার তো বহু গুণ রয়েছে যেটা আমরা সবাই জানি। আবার হয়তো কিছু কিছু মানুষ জানে না। সে কিছু কিছু মানুষ এবং সব মানুষেরই জন্য আমার আজকে বিষয় আলোচনা করা। যেটা আপনাদের সবারই জানা
প্রয়োজন। আমরা বা আমলকি আয়ুর্বেদিক উপাদান হিসেবে বলা যেতে পারে। আমরা খেতে সাধারণত টক লাগে। এটি বিভিন্ন কাজেও লেগে থাকে এবং এটি চিকিৎসা হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। আমলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে এবং ক্যালসিয়াম ফসফরাস লোহা ক্যারোটিন এছাড়া ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের মত অনেক খনিজ ও ভিটামিন রয়েছে।
কেশরিয়া পাতার কার্যকারিতা কি
কেশরিয়া পাতার কার্যকারিতা কি? কেশরিয়া বা কেশরাজ একে চুলের রাজাও বলা হয়। সাধারণত মেয়েরা নিজেকে অন্যদের থেকে আলাদা দেখতে পছন্দ করে। সেই সাথে চুল দেখতে সুন্দর লাগবে এটাও পছন্দ করে। সেজন্য মেয়েরা যুগ যুগ ধরে চুলের যত্নে ব্যবহার করে আছে কেসরিয়া এর কান্ড
পাতা ফল ফুল। এই গাছে রয়েছে এল কলয়েড স্টেরল, উডে লোলকটন,লুটলিন গ্লাইকোসাইড, ট্রাইটারপিন গ্লাইকোসাইড এবং ফাইটোস্টেরল। এই গাছের পাতা সবুজ এবং ফুল দেখতে সাদা হয়। এটি বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এছাড়াও এই গাছ সাধারণত ভারত চীন থাইল্যান্ড
আরও পড়ুনঃ চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায় কি
এবং ব্রাজিলও দেখা যায়। গাছের কোন যত্ন নেয়া লাগে না কারণ এই গাছ এমনি এমনি কোন বন জঙ্গলে হয়ে থাকে। এই গাছ দেখতে লতার মত হয় এবং শাখা থেকে শাখা, এ গাছের দৈর্ঘ্য সাধারণত ৫০ থেকে ৬০ সেমি পর্যন্ত হয়ে থাকে। পাতা গুলো সাধারণত ৫ থেকে ৬ সেমি লম্বা হয়ে থাকে। এবং শাখার শেষের দিকে দুই থেকে তিনটি ফুল ফোটে ফুলগুলি পাকলে আবার মাটিতে ঝরে নতুন গাছ জন্ম নেয়।
চুলের যত্নে কেশরিয়া পাতার ব্যবহার
চুলের যত্নে কেশরিয়া পাতার ব্যবহার কি বা কিভাবে করা যায় তা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো কেশরিয়া পাতার এমন অনেকগুলো গুণ আছে যেগুলি আমাদের চুল ঘন কালো লম্বা করতে সাহায্য করে। এছাড়াও কেশরিয়া পাতা এর রস মাথায় দিলে মাথা ঠান্ডা থাকে ও শারীরিক কিছু সমস্যা ঠিক হয়ে
যায়। কিভাবে ব্যবহার করবেন কেশরিয়া পাতা? সপ্তাহে একদিন আমলার সাথে কেসরিয়া পাতা মিশিয়ে যদি চুলে দেন আপনার চুল কালো হবে এবং চুলের গোড়া মজবুত করবে। আমলার সাথে মিশানো কেশরিয়া পাতা চুলে দেবার পর আপনি একদিন অথবা দুই দিন রেখে দিতেও পারেন। এছাড়া যেদিন
দিবেন সেদিনও আপনি ধুয়ে ফেলতে পারেন। তবে মনে রাখবেন আমলার সাথে কেশরিয়া পাতা মিশিয়ে দিলে আপনার ঠান্ডা লাগতে পারে। যদি আপনি অতিরিক্ত ঠান্ডা সহ্য করতে না পারেন তাহলে গরমের সময় ব্যবহার করতে পারেন।
এই গাছ চুলের জন্য খুবই উপকারী। বিভিন্নভাবে এই গাছ ব্যবহার করা যায় যেমন এর পাতার রস তেলের সাথে মিশিয়ে মাথায় দিলে মাথা ঠান্ডা থাকে। নিয়মিত ব্যবহার করলে চুল পড়া বন্ধ হয় চুলের গোড়া মজবুত করে চুল ঘন ও কালো করে। এছাড়াও মাথায় যদি উকুন থাকে সেটিও ওষুধ হিসেবে কাজে লাগে।
কেশরীয়া গাছের উপকারতা কি
কেশরিয়া গাছের উপকার কি এই সম্পর্কে আপনাদের সাথে আলোচনা করা হলো। এই গাছ আমাদের চুলসহ শরীরের বিভিন্ন উপকারে আসে যেমন। কেসরিয়া গাছের রস প্রতিদিন আধা কাপ পানিতে মিশিয়ে যদি খাওয়া হয়, তাহলে শরীরের রক্তে প্রবাহ থেকে সমস্ত ধরনের ক্ষতিকারক পদার্থ সরিয়ে
যাবে। এছাড়াও এই রস স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে থাকে। আধা কাপ পানিতে নিয়মিত দু চা চামচ রস মিশিয়ে খেলে অনেকের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এই গাছ মানবদেহে রক্তের শর্করার মাত্রা ও গ্লাইড কচি লেটেড হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। কারো কৃমি থাকলে সেটিও ভালো হয়ে যায় যদি এই গাছের রস খাওয়া হয়নি নিয়মিত।
আরও পড়ুনঃ ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতে কি খাবেন
কেশরিয়া গাছের যদিও অনেক উপকার রয়েছে তবুও এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে যেমন, যাদের এলার্জি সমস্যা আছে তারা এই গাছ এর রস খাবেন না বরং এটি থেকে দূরে থাকুন। এছাড়া গর্ভবতী মহিলা এবং নবজাতকদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। যখন কমো থেরাপি দিবেন তখন এটি ব্যবহার
করবেন না। আপনার বেশি সমস্যা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। কারণ না জেনে কোন গাছ গাছড়ার ওষুধ খাবেন না। আপনি নিজে ভাল থাকুন এবং সুস্থ থাকুন।
আমলার কার্যকারিতা কি
আমরা কার্যকারিতা কি এ বিষয়টি বলেও শেষ করা যাবে না। আমলা বা আমলকি এটি আপনার চুল এর স্বাস্থ্য যেমন সুন্দর করে তুলে তেমনি আপনার শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। কারণ স্বাস্থ্যের জন্য আমরা খুবই উপকারী। আমলকি মানসিক চাপ কমায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় বমি ক ফ এবং ঘুম
না থাকলে ঘুম হয় এছাড়াও কোন ব্যথা থাকলেও এটি ভালো প্রতিষেধক ফল। এছাড়াও পেটের বদহজম ভালো করে দেয়। কারণ আমলাই রয়েছে ফাইটোকেমিক্যাল যা চোখের সঙ্গে জড়িয়েও ডিজাইনারেশন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। আমলা চুলের টনিক হিসেবে কাজ করে এবং চুলের পরিচর্যার জন্য
অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। এটি শুধু চুলের গোড়া মজবুত করে না চুলকে ঘন কালো লম্বা করতে সাহায্য করে। শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে এবং শরীরের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে ও বেশি মজবুত করে তোলে। ফুসফুস কে শক্তিশালী করে ও মস্তিষ্কের শক্তি বর্ধন করে। আমরা আচার বা
মোরব্বা মস্তিষ্ক ও নিহত যন্ত্রের দুর্বলতা কাটিয়ে দেয়। শরীরের বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় ফ্যাট ঝরাতেও সাহায্য করে আমরা। আমলার টক অতীত মুখের রুচি ও সাত বাড়িয়ে দেয়। রুচি ও খিদে বাড়ানোর জন্য আমলকি গুড়ের সাথে সামান্য মধু ও মাখন মিশিয়ে খাওয়ার আগে খেতে পারেন এইচ এন এম
এস। এছাড়াও আমলার জুস বানিয়েও খেলে অ্যাজমা দূর হয়ে যায়। এমন বিভিন্ন কার্যকারিতা রয়েছে এই আমলাই।
চুলের যত্নে আমলার ব্যবহার
চুলের যত্নে আমলার ব্যবহার বিভিন্ন ভাবে করা যায় যেমন, বাজারে কাঁচা আমলা এবং শুকনো আমলা দুটোই কিনতে পাওয়া যায়। সাধারণত শুকনো আমলা চুলের জন্য বেশি উপকারী এবং এর দামও কম।আপনি যদি শুকনো আমলা কিনে একটি পাত্রে ভিজিয়ে রাখেন সেই সাথে লোহা জাতীয় কিছু আমরা
সাথে রাখবেন, এবং একদিন পর সেটি কালো হয়ে যাবে এর সাথে কেশরিয়া পাতা একসাথে ব্লেন্ড করে নিবেন অথবা পা টাই বেটে নিবেন, এটি আপনার মাথা এবং চুলে ভালোভাবে মিশিয়ে দিন তারপর আপনি একদিন অথবা দুই দিনও সেটি রাখতে পারেন। রাখার পর আপনার মাথা ভালো ভাবে শ্যাম্পু
আরও পড়ুনঃ হতাশা থেকে কিভাবে নিজেকে বের করবেন
দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন আপনার চুল কালো হয়ে গেছে আপনি যদি প্রতি সপ্তাহে একবার নিয়মিত এগুলো ব্যবহার করেন তাহলে আপনার চুল ঘন কালো লম্বা হবে। চুলের গোড়া মজবুত হবে ও চুল ঝরে পড়বে না।
আমলার উপকারিতা কি
আমলার বিভিন্ন উপকার রয়েছে যেমন, চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে শরীরে স্বাস্থ্য ভালো রাখে ইত্যাদি। এছাড়াও আমলার রস যদি মধুর সাথে মিশিয়ে খাওয়া হয় তাহলে চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায়। কোন এক গবেষণায় দেখা গেছে এটি চোখের ভেতরের চাপ কে হ্রাস করে এবং দূরে জিনিস দেখতে পায় ও ছানি
পড়তে দেয় না। ভিটামিন এ এবং ক্যারোটিনিক মেলান নিক রাতের অন্ধকারে এটি মানুষের দৃষ্টি শক্তিকে অনেক শক্তিশালী করে তোলে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ এর ভূমিকা রয়েছে। আমলাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে যেটি অন্ত্রের মাধ্যমে খাদ্য বহন করতে সাহায্য করে এবং অন্তরের গতিবেগ
নিয়মিত রাখতে পারে। এছাড়াও ডায়রিয়া হলে আমরা খেলে ঠিক হয়ে যায়। এটি হৃদপিন্ডের পেশিকে শক্তিশালী করে। অতিরিক্ত কোলেস্ট্রেরল জমতে দেয় না আমলাতে ক্রোমিয়াম থাকে। চুল বড় হতে ও ঘন কালো করতে সাহায্য করে। আমলাতে অনেক প্রোটিন রয়েছে এটি পেশীবহুল উন্নয়ন ও অঙ্গস্বাস্থ্য
এবং অন্যান্য বিভাগীয় ক্রিয়া কলা পেয়ে বিস্তৃত জন্য অপরিহার্য। এছাড়াও আমরা প্রসবের পরিমাণ বৃদ্ধি করে ও মুত্রাশয় সংক্রমণ এবং গর্ভাবস্থায় সংক্রমণ রাখতে আমলকি অপরিহার্য ভূমিকা রাখে। আমরা বিভিন্ন সংক্রমনের হাত থেকে রক্ষা করে কারণ এটি। ব্যাকটেরিয়া এবং জীবাণুমুক্ত বৈশিষ্ট্য গুলি
রয়েছে সেজন্য আমরা শরীরের বিভিন্ন সংক্রমনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয় এবং শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর করে দেয়। আমড়াতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি যেটি শরীরের শ্বেত রক্ত কণিকার সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়। এমন বিভিন্ন উপকার করে আমলা।
আমলার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
আমলার উপকারের পাশাপাশি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে যেমন, অনেক গবেষণায় দেখা গেছে এটি কোন বিষাক্ত বা নেতিবাচক প্রভাবে উল্লেখ্য নেই। তবুও আমরা ব্যবহার সম্পর্কিত কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। হাইপার এসিডিটি ট্রিগার করতে পারে যদি আপনার হাইপার এসিডিটি বা ভিটামিন সি খাবারে
সংবেদনশীলতা সম্পর্কে খাওয়া উচিত হবে না। যারা অতিরিক্ত মোটা তাদের এই ফলটি না খাওয়াই ভালো। হাইপার গ্লাইসেমিক মানুষের জন্য পরামর্শ হলো যে বিষযুক্ত ফল ব্যবহার থেকে এড়িয়ে চলুন কারণ এটি সেসব মানুষদের স্বাস্থ্য অবস্থা খারাপ হতে পারে। যেসব মানুষের এলার্জি রয়েছে তারা
আমলকি খাওয়া থেকে দূরে থাকুন। আপনার বেশি সমস্যা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। কারণ আপনাদের সুস্থতায় আমার কাম্য। সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন অপরকেও সুস্থ রাখতে সাহায্য করুন।
লেখক এর মন্তব্য
ঘন কালো চুলের জন্য কেশরিয়া পাতা ও আমলার কার্যকারিতা কি? বিষয়টি হয়তো অনেকেই বুঝতে পেরেছেন। কেশরিয়া পাতা মানুষের শরীরসহ বিভিন্ন কাজে লাগে। আমলার অন্যতম কার্যকারিতা ও রয়েছে। ঘন কালো চুলের জন্য কেশরিয়া এর গাছ বা পাতা সেই সাথে আমরা মিশিয়ে চুলে দিলে
আপনার চুল মজবুত করবে, ঘন কালো ও লম্বা করতে সাহায্য করবে। এটি যদি আপনি নিয়মিত ব্যবহার করেন তাহলে আপনার চুল পড়া বন্ধ হবে। অল্প সময়ে আমলা ও কেশরিয়া পাতা একসাথে ব্লেন্ড করে আপনার মাথায় ভালোভাবে মিশিয়ে ব্যবহার করলে আপনার চুল দিন দিন সুন্দর হয়ে উঠবে। যা প্রতিটি
মেয়েদের পছন্দ। প্রিয় পাঠক এই বিসয় গুল যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করে পাশে থাকবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url